শ্যামলী আকতার, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ প্রায় ৪০ লাখ মানুষের জন্য একমাত্র হাসপাতালটি নোংরা পরিবেশ,জনবল সংকট,অব্যবস্থাপনা,অনিয়ম দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বর্তমানে নিজেই রোগীতে পরিনত হয়েছে। হাসপাতালালের তত্বাবধায়ক অসুস্থ্যতার অজুহাতে ছয় মাসেরও অধিক সময় ধরে বাসায় শুয়ে থেকে বেতন ভাতা তুলছেন। অধিকাংশ চিকিৎসকই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে। যদিও তারা দু একঘন্টার জন্য হাসপাতালে ঢু মারেন তবুও তাদের কাছে সাধারণ রোগীরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না। কাগজে কলমে পথ্য সরবরাহের দীর্ঘ তালিকা থাকলেও বাস্তবে রোগীরা পাচ্ছেন অতি নিম্নমানের সামান্য খাবার। নষ্ট লিফট, আর দুর্গন্ধময় টয়লেটগুলো ব্যবহার উপযোগীতা হারিয়েছে অনেক আগেই।
সম্প্রতি একদল সাংবাদিক ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে দেখতে পান, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২৫০ শয্যা হলেও প্রতিদিন ভর্তি থাকে প্রায় ৪শত থেকে ৫শত রোগী।এর পরেও রোগীর চাপে বেড তো দূরের কথা, অনেক সময় ফ্লোরেও জায়গা মেলে না। হাসপাতালের রোগী ওয়ার্ড সহ সর্বত্রই নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে। রোগীরা বলেন, এখানে রোগীরা সুস্থ্য হওয়ার জন্য এলেও অধিকাংশই আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়ে পরিবেশের কারণে। অন্যদিকে সেবা না পাওয়া প্রসঙ্গে নার্সরা বলেন রোগীর চাপে এবং জনবল সংকটের কারণে আমরা কাঙ্খিত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। হাসপাতালের দুটি লিফটের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। গুরুতর রোগী বা বয়স্কদের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবাধে কুকুরের বিচরণ তো আছেই। হাসপাতালে অধিকাংশ পরীক্ষার রিপোর্ট বাইরে থেকে করাতে হয়। প্রায় সব ওষুধই বাইরে বাহিরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়। গুরুতর রোগীদের নিজেদের দায় এড়াতে এবং ঝামেলামুক্ত থাকতে ভর্তি করার সাথে সাথেই রেফার্ড করা হয় রংপুর অথবা দিনাজপুরে। রোগী এবং তাদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ‘ এই হাসপাতালে সময় মতো ডাক্তার পাওয়া যায় না। নার্সরা আচরণ খারাপ করেন, বিরক্তি বোধ করেন। তাদের কোনো কিছু বলতে গেলে বিরক্ত বোধ করেন। প্রতি সোরবারের খাদ্য তালিকায় দেখা যায় ২৫০জন রোগীর জন্য খাদ্য তালিকায় আছে খাসির মাংস ৯০ কেজি,মসুর ডাল ১৭ কেজি ৫শ গ্রাম,সয়াবিন তেল ৩৫ কেজি, গরম মসলা ২.৫ কেজি,ডাল মসলা ২.৫ কেজি আদা ৫ কেজি, চিকন চাল ১শ কেজি নির্ধারিত করা আছে। বাস্তবে সরবরাহ করা হচ্ছে খাসির মাংস ৪০ কেজি অন্যান্য পণ্যও অর্ধেকের কম সরবরাহ করা হচ্ছে ফলে রোগীনা নিম্নমানের খাবার পাচ্ছে। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা ঠিকাদার এবং খাদ্য সরবরাহ ঠিকাদার ঢাকার। তাদেরকে কেউ কখনও দেখেননি। আদৌ তারা বাস্তবে আছে কি না তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ। অনেকেই মনে করছেন কোন ঠিকাদারের নামে প্রভাবশালী কেউ খাদ্য ও পরিচ্ছন্নতার ঠিকাদারি কাজ নিয়ে ইচ্ছে মত কাজ করছে ফলে তাদের ধরার মতো কোন উপায় থাকছেনা।
এব্যাপারে সিভিল সার্জন আনিছুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে হস্থক্ষেপ করার বিষয়ে কোন আইন আমাদের কাছে নেই। অপরদিকে বৃহত্তর দিনাজপুরের হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিনিধি জানান “ এ বিষয়গুলো এবং ঠিকাদার নিয়োগ পদ্ধতিগুলো ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা মহোদয়কে আমরা অবগত করি। তিনি সেই সময়ে সিভিল সার্জনকে বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন জানান হাসপাতাল তত্বাবধায়ক ডাঃ ফিরোজ আমার কথা শুনছেন না। পরবর্তীতে হাসপাতালে ঠিকাদার নিয়েগ কীভাবে হয়েছে তা তিনি জানেন না।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালটির অনিয়ম দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে অবিলম্বে পরিচালক পদে সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ ও সচেতন মানুষ।
সম্পাদক : শাওন আমিন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোঃ গিয়াস উদ্দীন, নির্বাহী সম্পাদক : ঝড় আমিন প্রকাশক : মোঃ সোহরাব আলী
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: হালিশহর, চট্রগ্রাম। ঢাকা অফিস : বাসা নং ৫১/৩ ধানমন্ডি ৩/এ ঢাকা-১২০৯
মোবাইল : 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟒𝟏𝟓𝟖𝟓𝟑 𝟎𝟏𝟓𝟖𝟎𝟖𝟐𝟎𝟔𝟔𝟑 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟎𝟔𝟏𝟏𝟔𝟑 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥 : 𝐬𝐡𝐚𝐰𝐨𝐧𝐚𝐦𝐞𝐞𝐧𝟓@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦