মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় প্রতিনিধি:পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় জমি দখলে নিতে মাদরাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার পরিচালক ও সহসভাপতির বিরুদ্ধে। গেল সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ভাউলাগঞ্জ জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানা সংলগ্ন এলাকায় এঘটনাটি ঘটে। এসময় মাদরাসা সংলগ্ন জমিতে থাকা একটি টিনশেড ঘর ও ঘর সংলগ্ন দেয়াল হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে দেন মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। ঘরের টিনের বেড়া ও ইট দূরে সড়িয়েও রাখেন তারা। এনিয়ে কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, লাঠিসোটা নিয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা দাড়িয়ে আছেন। পরে এনিয়ে দেবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন জমির মালিক মনিরুজ্জামান মানিক। অভিযোগ করা হয়, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জমি দখলে নিতে নির্দেশদাতা ছিলেন মাদরাসাটির পরিচালক হাফেজ মাওলানা নুরুল আলম সফিক ও মাদরাসাটির সহসভাপতি মমিনুল হক প্রামাণিক। এদিকে, জমি দখলে নিতে মাদরাসা ছাত্রদের ব্যবহার করায় স্থানীয়রা এঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন। যদিও অভিযুক্তরা দাবি করেছেন, মাদরাসার রান্না ঘরের প্রয়োজনীয়তা থাকায় সহসভাপতি মমিনুল হক প্রামাণিক ঘর সহ জমি দান করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে ও অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে ৪৩৬ দাগে ১ একর ৪৬ শতক জমি ক্রয় করেন সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক। পরে ওই জমির মধ্যে ৪৬ শতক জমি বুঝে না পাওয়ায় তার নামে এক একর জমি রেকর্ড হয়। পরবর্তীতে তিনি ছোট ছেলে মনিরুজ্জামান মানিকের নামে ৪০ শতক জমি দেন। অবশিষ্ট জমি তিনি বিভিন্ন জনের নিকট বিক্রি করেন। এই ৪০ শতকে মানিকের গোডাউন, বাড়ি সহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। গেল সোমবার ওই জমিতে থাকা একটি টিনশেড ঘর দখলে নিতে লাঠিসোটা ও হাতুড়ি দিয়ে দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা হয়। এছাড়া ওই জমিতে বাস করা এক ব্যাক্তিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি ভেঙ্গে চলে যেতে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া অভিযুক্ত মাদরাসার পরিচালক নুরুল আলম সফিক আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গেল ৫ আগস্ট তিনি ছাত্র জনতার তোপের মুখে পড়লে স্থানীয়রা তাকে নিরাপদে সড়িয়ে নিতে যান। এসময় এক বিএনপি নেতার হাতের আঙ্গুল কামড়ে কেটেও নেন তিনি এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। মানিকের নামে থাকা ২০ শতক জমি নিয়ে বর্তমানে বিরোধ চলমান রয়েছে।
ভূক্তভোগী মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, আমার বাবা আমার নামে ৪০ শতক জমি দিয়েছেন। এখানে ২০ শতক জমি নিয়ে বড় ভাই মমিনুল মালিকানা দাবি করছেন। অথচ তিনি কোন জমির মালিক নন। তিনি মাদরাসার হুজুর সহ ছাত্রদের দিয়ে আমার জমিতে থাকা বির্ভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর করে একটি ঘর দখল করেছেন। মাদরাসার ছাত্ররা লাঠিসোটা নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে আমার দেয়াল সহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলে। মাদরাসা ও মসজিদ আমার বাবার দান করা জমিতে আছে। এছাড়া তারা সবাইকে হুমকী দিয়ে বেড়াচ্ছে মমিনুল ও হুজুর। তারা আমার অনেক টাকা ক্ষতি করেছে। আমি এর বিচার চাই।
শরিফা বেগম নামে এক নারী বলেন, মাদরাসার কয়েকজন হুজুর ও মমিনুল ছাত্রদের বলতেছেন তোমরা ভাঙ্গো। আর তারা দাড়িয়ে আছেন। এভাবে জমি দখল করতে মাদরাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা কখনোই ঠিক হয়নি। ছোট থেকে বাচ্চারা এসব শিখলে বড় হয়ে তারা কি হবে কি করবে। এসব কি তাদের শেখানো ঠিক হয়েছে।
অভিযুক্ত মমিনুল হক প্রামাণিক বলেন, আমি আমার বাবা জমি মাদরাসাকে দিয়েছি। শিক্ষার্থীরা সেখানে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করছিল। এখানে কাউকে হামলা করা হয়নি। উল্টো তারাই আমার উপর হামলা করেছে। ছাত্রদের ধাওয়া করেছে। আমি এর বিচার চাই।
ভাউলাগঞ্জ জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মাওলানা নুরুল আলম সফিক বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য রান্না করার জায়গা নেই। সেখানে কিছু জমি মমিনুল সাহেব দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা সেটি পরিস্কার করছিল। কিন্তু যারা মাদরাসা চায়না এমন একটি চক্র দ্বীনি শিক্ষা বন্ধ করে দিতে চক্রান্ত করছে তারা। আমাদের কাছে সব কাগজপত্র আছে জমির। কাগজপত্র যাচাই বাছাই সাপেক্ষে যে পাবে তাকে দেয়া হোক এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।
সম্পাদক : শাওন আমিন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোঃ গিয়াস উদ্দীন, নির্বাহী সম্পাদক : ঝড় আমিন প্রকাশক : মোঃ সোহরাব আলী
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: হালিশহর, চট্রগ্রাম। ঢাকা অফিস : বাসা নং ৫১/৩ ধানমন্ডি ৩/এ ঢাকা-১২০৯
মোবাইল : 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟒𝟏𝟓𝟖𝟓𝟑 𝟎𝟏𝟓𝟖𝟎𝟖𝟐𝟎𝟔𝟔𝟑 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟎𝟔𝟏𝟏𝟔𝟑 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥 : 𝐬𝐡𝐚𝐰𝐨𝐧𝐚𝐦𝐞𝐞𝐧𝟓@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦