মনসুর আহম্মেদ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি।। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে খাস খতিয়ান ভুক্ত জমি ভূমি দস্যু ও জবর দখল কারীদের নিকট থেকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহযোগিতায় ও সহকারী কমিশনার ভূমি এর নির্দেশে খাস খতিয়ান ভুক্ত জমি জবর দখল কারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্তের জন্য সরকারি খাস জমি সীমানা নির্ধারণসহ ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জমি উদ্ধারের জন্য সার্ভেয়ার প্রেরণ করেন পীরগঞ্জ উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার।
গত ১৬ ই অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সহকারী ভূমি কমিশনার (ভূমি) হতে সার্ভেয়ার ছুটে যান উপজেলার ৮ নং দৌলতপুর ইউনিয়নের বনুয়াপাড়া গ্রামে ও অবাশ্রম এলাকায়। সেখানে গিয়ে সরেজমিনে তিনি সরকারি খাস জমির উপর ফিতা টেনে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি বসে দেন। পরে একে একে আসতে শুরু করেন ভূমিহীনদের পরিবার ভূমিহীনদের উপস্থিতিতে মাপ যোগ শুরু করেন সার্ভেয়ার। সরকারি খাস জমি মাপযোগ চলাকালে ভূমিহীনদের সাথে প্রভাবশালীদের বাক বিতণ্ডা চলে। কিছুক্ষণ চলার পর সার্ভেয়ার পরিবেশ শান্ত করেন। পরে আবারো মাপ যোগ শুরু করেন সার্ভেয়ার। মাপযোগ শেষে সীমানা নির্ধারণ কাজ শেষ করেন। পরে দুই পক্ষকে একত্র করে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে আসার জন্য প্রস্তাব দেন। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখাশুনার পর ও আলোচনা সাপেক্ষে পরবতীর্তে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য পরবতীর্ পদক্ষেপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেখবেন।
ভূমিহীন পরিবারগুলোর দাবি বোনাপাড়া নদীর চর এলাকায় একটি খেলার মাঠ ছিল। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে আশপাশ এলাকার মানুষ ফুটবল খেলা খেলতো। সাধারণ মানুষের দাবি বিগত দিনে ৮ নং দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় ও বর্তমান চেয়ারম্যান সনাতন চন্দ্র ২০২১ সাল থেকে এই খেলার মাঠে বেশ কয়েকবার ফুটবল খেলা উদ্বোধন করেন। জবরদখল কারীরা জোরপূর্বক সেই খেলার মাঠ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন এই নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পর, প্রভাবশালীদের কাছ থেকে সেই জমি মাপ যোগ করে উদ্ধার করা হচ্ছে। তবে ভূমিহীনরা বলছেন আমাদের বন্দোবস্ত দেওয়ার পরে অবশিষ্ট সরকারি খাস জমি যদি থেকে থাকে তবে বাকী ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেবে সরকার এটাই আমরা চাই।
তাছাড়া সরকার চাইলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে আমরা এটা সুষ্ঠু একটি সমাধান চাই। স্থানীয় শিশু কিশোররা বলছেন আমরা এর আগে এই মাঠে খেলাধুলা করতে আসতাম। সেই খেলার মাঠটি এখন প্রভাবশালীদের দখলে। প্রভাবশালীরা আমবাগান করেছে চাষাবাদের জন্য ফসল মাঠ বানিয়েছেন। যে যার মতো করে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছেন অনেকেই করেছেন আমবাগান, কেউবা করেছেন গাছ রোপন। ভূমিহীন পরিবারগুলো ন্যায়সংগত দাবী ভূমি দস্যুরা যতই শক্তিশালী হোক অবৈধ ভাবে এত সম্পদ হরন করবে আর অসহায় ভূমিহীনরা ভূমিহীন থাকবে এটা কোন মতেই ঠিক না। বিধি অনুযায়ী ভূমিহীনদের দাবী বাস্তবায়িত হবে। প্রশাসন সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি নায্য দাবী হিসেবে সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে তুলে ধরার জন্য ও ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন চান ভূমিহীন পরিবারগুলো।
এলাকার কিছু ভূমিদস্যু ও জবরদখলকারী ব্যক্তি খাস খতিয়ান ভুক্ত জমি জবর দখল করে আম বাগান, বাঁশ বাগান সহ বালু উত্তোলন করছে। এ নিয়ে দ্বন্ডের সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে প্রকৃত ভূমিহীনরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের মাঝে উক্ত জমি বরাদ্দ সহ খেলার মাঠ দেওয়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের নিকট ধরনা দেয়।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান জানান, সার্ভেয়ার পাঠানো হয়েছে, সার্ভেয়ার গিয়ে সেখানে সীমানা নির্ধারণ করেছেন এবং দুই পক্ষের লোকজনকে আসতে বলা হয়েছে। ভূমি বন্দোবস্তের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সহ দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এন এম ইশফাকুল কবীর বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্যারের নির্দেশক্রমে বনুয়াপাড়া গ্রামে ও অবাশ্রম এলাকায় সার্ভেয়ার পাঠানো হয়েছিল তাদের কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা ও সীমানা ঠিক আছে কিনা সেটি দেখার জন্য সার্ভেয়ার পাঠানো হয়, পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে দুই পক্ষকে ডাকা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার জেলা রোভার স্কাউট ঠাকুরগাঁও / পীরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজ শিক্ষক বাকাউল হক জিলানী, রিংকু চৌধুরী বলেন, ধন্যবাদ জানাই পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও প্রশাসনকে।
বিষয়টি আমলে নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, এটি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, যেটা প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন এবং দুই পক্ষকে ডেকে এটি সমাধান করবেন বলে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা থাকবে প্রশাসনের কাছে। তাছাড়া ৮ নং দৌলতপুর ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বনুয়াপাড়ায় সরকারি খাস জমিতে একটি খেলার মাঠ ছিল এখানে স্থানীয় শিশু কিশোররা খেলাধুলা করতো এখনো মাঠটি রয়েছে এই মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বেশ কয়েকবার খেলা উদ্বোধন করেছেন আমরা সেটা দেখে এসেছি। এই খেলার মাঠটি যারা খেলাধুলা করতো এবং এই খেলাধুলার সাথে যারা জড়িত ছিল তাদেরকে এই খেলার মাঠটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই নিয়ে ২০২৪ সালে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের সামনে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেই মানববন্ধন শেষে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এলাকাবাসীর দাবি সংশ্লিষ্ট খেলার মাঠ এর আগে ছিল আমরাও চাই খেলার মাঠটি থাকবে। সরকারি যে সম্পদ রয়েছে সেই সম্পদ ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেওয়া হোক এখানে ২২২৯/২২৬৫ দুই দাগ মিলে ১২.৫ একর জমি আছে খেলার মাঠ রেখে অবশিষ্ট জায়গা ভূমিহীনদের দেওয়া হোক এটা আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ চাই।
এদিকে ইউনিয়ন বিএনপির
সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ চৌধুরী মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় খেলাধুলা হতো আমরা যারা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আছি আমরাও দেখেছি এখানে স্থানীয় শিশু কিশোর যুবক খেলাধুলা করতো। আমি চাই এই মাঠটি তাদের খেলার উপযোগী করে দেওয়া হোক। তবে ১৪২৩ দাগেটিতে যে জায়গা রয়েছে সেটি খেলার মাঠ হিসেবে উপযোগী নয় ।
সম্পাদক : শাওন আমিন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোঃ গিয়াস উদ্দীন, নির্বাহী সম্পাদক : ঝড় আমিন প্রকাশক : মোঃ সোহরাব আলী
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: হালিশহর, চট্রগ্রাম। ঢাকা অফিস : বাসা নং ৫১/৩ ধানমন্ডি ৩/এ ঢাকা-১২০৯
মোবাইল : 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟒𝟏𝟓𝟖𝟓𝟑 𝟎𝟏𝟓𝟖𝟎𝟖𝟐𝟎𝟔𝟔𝟑 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟎𝟔𝟏𝟏𝟔𝟑 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥 : 𝐬𝐡𝐚𝐰𝐨𝐧𝐚𝐦𝐞𝐞𝐧𝟓@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦