পঞ্চগড় প্রতিনিধি।। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন । নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের চলছে ব্যস্ততম সময়। সভা-সমাবেশ গণসংযোগ করে চলেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তেঁতুলিয়া সরকারি ডিগ্রী কলেজ মাঠে বিশাল জনসভার আয়োজন করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড় এক আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা আওয়ামীলীগ সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন ও একই দিনে আরবী মাসের ১২ ই রবিউল আউয়াল হওয়ায় জনসভার শুরুতে দোয়ার আয়োজন করা হয়। নানান বৈচিত্র্যে ভরা এই অনুষ্ঠানে বীর প্রতিক আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা, শতশত আলেম, তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুণীজন, জাতীয় দলের কয়েকজন নারী খেলোয়াড়সহ হাজার হাজার মানুষ এই অনুষ্ঠাণে মিলিত হন। অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুরো তেঁতুলিয়া উপজেলা উৎসবের শহরে পরিণত হয়।
পঞ্চগড় এক আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী মূলত একজন, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির অন্যদিকে আওয়ামীলীগে প্রধানত তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী।বর্তমান এমপি মোজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট এবং জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা।
তেঁতুলিয়া, আটোয়ারি এবং পঞ্চগড় সদর এই তিন উপজেলা নিয়ে পঞ্চগড় সংসদীয় আসন এক। তিন উপজেলার মধ্যে আটোয়ারি সবসময় আওয়ামীলীগের দূর্গ। আটোয়ারিতে আওয়ামীলীগ যেসব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তার কোনোটিতেই পরাজিত হয়নি । অন্যদিকে তেঁতুলিয়ায় আওয়ামীলীগ কখনই নির্বাচিত হতে পারেনি! এমনকি ২০১৮ সালের যে নির্বাচনকে বিএনপি প্রশ্নবিদ্ধ করে থাকে সেই নির্বাচনেও তেতুলিয়ায় বিএনপি জয়লাভ করেছিল।
সম্প্রতি ভোটের সকল হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়ে তেঁতুলিয়ায় গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা। মুক্তা তেঁতুলিয়া আওয়ামীলীগের সূতিকাগার কাজী পরিবারের জামাই। তেঁতুলিয়া মানুষের মুখে মুখে এখন এই স্মার্ট নেতার নাম। গত ৯ সেপ্টেম্বর নাঈমুজ্জামান মুক্তা তাঁর নিজ উপজেলা আটোয়ারিতে এক জনসভা করেছিল সেই সমাবেশে দশ হাজারেরও অধিক মানুষ সমবেত হয়েছিল। যা আটোয়ারি উপজেলার ইতিহাসে সর্বোবৃহৎ জনসভা ছিল। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তেঁতুলিয়া সরকারি ডিগ্রী কলেজ মাঠে মুক্তা যে সমাবেশ করেছে সেটিও স্মরণকালের সর্বোবৃহৎ! এর মূল কারন মুক্তার বিনয়ী আচরণ, গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক, তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে রাত্রযাপন এবং সৃজনশীল ডিজিটাল ক্যাম্পেইনসহ ব্যতিক্রমী সব আয়োজন করে চলেছে গত ১৫ বছর ধরে। পঞ্চগড়ের তরুণরা তাঁর প্রতি ভিষণ ভাবে আসক্ত।
তেঁতুলিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জুয়েল বলেন-“নাঈমুজ্জামান মুক্তাকে যদি এবার নৌকা দেয়া হয় তাহলে ইতিহাসে প্রথমবার তেঁতুলিয়া বিএনপির দূর্গ ভেঙ্গে চুরর্মার হয়ে যাবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতিক আব্দুল মান্নান বলেন-“ইউপি নির্বাচনে চেয়ায়ম্যান, মেম্বার প্রার্থীরা যেভাবে বাড়ি বাড়ি যায় মুক্তা সেই ভাবে হেটে হেটে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। সে সকলকে সম্মান করে। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এমন সৎ শিক্ষিত তরুনকে বঙ্গবন্ধু কণ্যা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেবেন।”
৯০ এর ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা বাংলাদেশ একাংশের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতিয় পার্টির প্রার্থী আবু সালেক কে পরাজিত করে জাসদের নাজমুল হক প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁরা দুজনই আবারও নির্বাচনে অংশ নেবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই আসনে জামায়াত নেতা আব্দুল খালেকও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর পঞ্চগড় এক আসনটি বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির দখলে ছিল বেশীরভাগ। ২০০৮ সালে এবং ২০১৮ সালে নৌকা বিজয়ের পর আওয়ামীলীগ এই আসনটি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর।
সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে নওশাদ জমির উচ্চ শিক্ষিত এবং তরুন।
আওয়ামীলীগ এই আসনটিকে ধরে রাখতে চাইলে তরুণ ভোটারদের কাছে নন্দিত পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে বলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা মনে করেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জুলফিকার আলী জুয়েলের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাইয়েবুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক, আরিফুল ইসলাম পল্লব, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক ও পঞ্চগড় পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশরাফুল আলম, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আহসানুল হক লিটন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মখলছার রহমান রেজা, পৌর যুবলীগের হাসনাত সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর হাসানার মো. হামিদুর রহমানসহ জেলা- উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। #