।।শহীদুল ইসলাম শহীদ,পঞ্চগড়।।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে মহালয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের "সন্ত্রাসী" আখ্যা দেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমান। তাঁর এই মন্তব্য ও সাংবাদিকদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের পরও তিনি বহাল তবিয়তে থাকায় বিষয়টি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাঁধা দান ও তাঁর আগ্রাসী মনোভাব অপেশাদার আচরণ। একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কিভাবে সাংবাদিকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতে পারেন।
এদিকে, ঘটনার ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। এমনকি কোন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। সাংবাদিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের খুঁটির জোর কোথায়। কি কারণে নেয়া হচ্ছে না কোন ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, এই ঘটনায় কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।
তাঁর বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে কোন মন্তব্য করেন নি জেলা প্রশাসক।
এদিকে, গত রবিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে সাংবাদিকদের নিয়ে আবারো আপত্তিকর লেখা পোস্ট করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমান।
ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান বলেন, “আমরা মহালয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দায়িত্বটা তো ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে বাঁধা প্রদান করেন। ঘাটে একবারে ফাঁকা ছিল এবং অন্যান্য ব্যক্তিদেরও যেতে দেখা যায় মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকা পারাপার হতে। ইউএনও নিজেও নৌকায় করে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘাট পারাপার হচ্ছিলেন। তাহলে সাংবাদিকদের যেতে বাধা কেন?
বাংলাভিশন টেলিভিশনের সাংবাদিক মোশারফ হোসেন বলেন, সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী বলা জেলা প্রশাসনের সেই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি এখন সাংবাদিকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর আরো পোস্ট করছেন। কোন কিছুরই বিচার হচ্ছে না। তাহলে সেই ম্যাজিস্ট্রেটের খুঁটির জোর কোথায়। কি কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসন যদি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আমরা কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবো।
এর আগে, গত রবিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীর তীরে এঘটনাটি ঘটে।
পরে মহালয়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করা হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে মহালয়া উপলক্ষে শতাধিক যাত্রী বহনকারী নৌকা ডুবে যায়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় ৭১ জনের মৃত্যু হয়। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নৌকাডুবির তিন বছর পূর্তি ও বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৬–৭ জন সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহ করতে যান।
এসময় করতোয়া নদীর ঘাটে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমান সাংবাদিকদের নদী পার হতে বাঁধা দেন। সেই সময়ে নদীতে তিন থেকে চারটি নৌকা চলাচল করছিল এবং নৌকায় মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপার হচ্ছিল মানুষজন। কিন্তু সাংবাদিকরা নৌকায় উঠতে চাইলে তিনি বাঁধা দিয়ে বলেন মোটরসাইকেল নেওয়া যাবে না। সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন—“যখন অন্যরা মোটরসাইকেল পার হচ্ছে, আমরা কেন নিউজের কাজে যেতে পারব না?” এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনি আল জাজিরা, বিবিসি বাংলা আর আর্ন্তজাতিক সাংবাদিক হন আর যেই সাংবাদিক হন, তাতে আমার যায় আসে না। যেতে পারবেন না।” তাঁর এমন আচরণের সাংবাদিকরা ক্যামরায় রেকর্ড করলেই কিছুক্ষণ পরেই তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও অশালীনভাবে বলেন, “আপনারা সন্ত্রাসী।” শতাধিক লোকের সামনে সাংবাদিকদের এভাবে অপমানিত করার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সম্পাদক : শাওন আমিন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোঃ গিয়াস উদ্দীন, নির্বাহী সম্পাদক : ঝড় আমিন প্রকাশক : মোঃ সোহরাব আলী
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: হালিশহর, চট্রগ্রাম। ঢাকা অফিস : বাসা নং ৫১/৩ ধানমন্ডি ৩/এ ঢাকা-১২০৯
মোবাইল : 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟒𝟏𝟓𝟖𝟓𝟑 𝟎𝟏𝟓𝟖𝟎𝟖𝟐𝟎𝟔𝟔𝟑 𝟎𝟏𝟕𝟏𝟐𝟎𝟔𝟏𝟏𝟔𝟑 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥 : 𝐬𝐡𝐚𝐰𝐨𝐧𝐚𝐦𝐞𝐞𝐧𝟓@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦