1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
ভোট চুরিতে জড়িত কর্মকর্তারা এখনো বহাল, এদের সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয় : মাওলানা ইকবাল হোসাইন প্রকাশ পেল প্রিয়া অনন্যা ও নিলয়ের ‘তুমি আমি রাজি’ রুহিয়া থানা প্রেসক্লাবের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত আনিস কে বিয়ে করতে দিলো না পুলিশ দীর্ঘ ১৬ বছর পর তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন।।  রঞ্জু সভাপতি শাহীন সম্পাদক নির্বাচিত ঘোড়ার ঘূর্ণি প্রশ্ন //  সাইফুল ইসলাম সরকার পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবকে নিয়ে ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট : থানায় তিন সাংবাদিকের এজাহার ঠাকুরগাঁওয়ে জাকজমক আয়োজনে টি ২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু ভবানীগঞ্জ সরকারি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধানের বিদায় ও সংবর্ধনা  জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজের মানোন্নয়ন লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কর্মশালা

হানি ব্যাজারঃ বন্য জগতের এক অকুতোভয় প্রাণী।

মোঃ আবু ফজল ফাহিম
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩
  • ৪৮৮ বার পড়া হয়েছে

প্রাণীজগতে এমন একটি প্রাণী রয়েছে যাকে এক কথায় ‘অকুতোভয়’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়। এটির সাহসিকতা, স্থিতিস্থাপকতা, এবং অভিযোজনযোগ্যতা এই প্রাণীটিকে প্রাণীজগতের অন্যান্য প্রাণীর থেকে আলাদা করে তুলেছে। এই প্রাণীটির নাম “হানি ব্যাজার” বৈজ্ঞানিক নাম “Mellivora capensis”। বেজির মতো দেখতে এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটিকে প্রায়শই ‘অকুতোভয়’ প্রাণী হিসেবে বলা হয়ে থাকে যাকে ঘিরে গবেষক ও প্রাণী বিশেষজ্ঞদের আগ্রহের শেষ নেই। এটির অসাধারণ বৈশিষ্ট্য, আচরণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এর অবদান অন্যান্য প্রাণীদের থেকে এটিকে অনন্য করে তুলেছে।
হানি ব্যাজার তার নির্ভীক খ্যাতিটি পেয়েছে তার ভয়হীন ও সাহসী বৈশিষ্ট্যের কারণে । বড় বড় শিকারী প্রাণী যেমন, বিষাক্ত সাপ, হায়েনা থেকে সিংহ পর্যন্ত এই প্রাণীটিকে এড়িয়ে চলে তার ভয়হীন বৈশিষ্ট্য ও আচরণের ফলে। বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত সাপের সাথে মোকাবিলা করা কিংবা সিংহ জাতীয় বড় বড় শিকারী প্রাণীদের সাথে মোকাবিলা করে নির্বিঘ্নে বন্যজীবনের জীবনযুদ্ধে টিকে থাকা প্রাণী হিসেবে এটি অনন্য নজীর স্হাপন করেছে। প্রতিকূল পরিবেশ ও শিকারী প্রাণীদের সাথে মোকাবিলা করে দিব্যি টিকে থাকা এই প্রাণীটি নির্ভিক উপাধি পেয়েছে যা প্রাণীজগতের অন্যান্য প্রাণীর থেকে এটিকে আলাদা করেছে। টিকে থাকে কোনো কিছুকেই ভয় না করা ও প্রতিকূল পরিবেশে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ গ্রহন করায় এটি অনন্য।

আফ্রিকা ও সাভানার তৃণভূমি, বনাঞ্চলে ও এশিয়ার কিছু অংশে এই হানি ব্যাজার দেখা যায়। এদের অসাধারণ অভিযোজন ক্ষমতা এবং খাদ্যাভ্যাস এইসব প্রতিকূল অঞ্চলে টিকে থাকতে সাহায্য করে। এরা সাধারণত মৃত প্রাণী ও পচাঁ মাংস জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে তবে এদের খাদ্য তালিকায় ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, ফলমূল থেকে শুরু করে বিষাক্ত সাপ, সরীসৃপ ও পাখি পর্যন্ত রয়েছে। এই বহুমুখী খাদ্যতালিকা তাদেরকে খাদ্যশৃঙ্খলে সবার উপরে থাকতে এবং চির-পরীবর্তনশীল বন্য পরিবেশে টিকে থাকার যোগ্যতা অর্জন করতে সাহায্য করেছে।

হানি ব্যাজারের শারীরিক বৈশিষ্ট্য অবাক করার মতো। এরা আকারে ছোট দেখতে হলেও এদের রয়েছে শক্তিশালী চোয়াল ও ধারালো নখ যা এদের শিকার করতে ও খাদ্য গ্রহণ করতে সাহায্য করে। এদের চামড়া শক্ত ও নমনীয় অনেকটা রাবারের মতো যা এটিকে বিভিন্ন শিকারী প্রাণীর আক্রমণ ও বিষাক্ত সাপের ছোবল থেকে রক্ষা করে এছাড়াও এদের পিঠ জুড়ে সাদা ও কালো রঙের দাগ রয়েছে যা তাদের উপর আক্রমণ করা সম্ভাব্য শিকারী প্রাণীদের সতর্কতা প্রদান করে এবং বেঁচে থাকার জন্য তারা যে কোনোকিছুই মোকাবিলা করতে পারে তার প্রমান দেয়।

হানি ব্যাজারের শারীরিক সক্ষমতার বাইরেও এদের রয়েছে আশ্চর্যজনক বুদ্ধিমত্তা যেটি ব্যাবহার করে তারা শিকার করে। দেখা গেছে এই বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তারা আঁটোসাটো জায়গা থেকে পোকামাকড় বের করার জন্য লাঠি ও বিভিন্ন সরঞ্জাম করে। প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকা ও আশেপাশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক সরঞ্জাম তাদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা তাদের বেঁচে থাকার বৈশিষ্ট্যগুলোর মাঝে এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে।

এরা সাধারণত একাকী ও স্বাধীন প্রাণী, অন্যান্য প্রাণীদের মতো এরা দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করেনা, এরা স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতেই বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই নিঃসঙ্গ প্রকৃতি তাদের চুরি করে খাবার সংগ্রহ করতে, খাবারে অন্যের ভাগ না দিতে ও প্রতিকূল পরিবেশে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে অনেকাংশে বৃদ্ধি করে তোলে।

অস্বাভাবিক বেঁচে থাকার সক্ষমতা থাকা সত্বেও হানি ব্যাজার বর্তমানে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পথে। বনাঞ্চল ধ্বংস করা, চোরাকারবারি, পরিবেশ দূষণ এবং হানি ব্যাজার নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য এদের বিলুপ্ত হবার পথের প্রধান কারণ। তাদের অনবদ্য জীবন বৈচিত্র্য এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এই প্রাণীটিকে সংরক্ষণ করা আমাদের উচিৎ।

হানি ব্যাজারের অদম্য মনোভাব, সাহসীকতা এবং বিভিন্ন পরিবেশে এদের অভিযোজন যোগ্যতার কারণে এরা যথাযথ ভাবে প্রাণীজগতে সম্মানের স্থান অর্জন করেছে। প্রতিকূল পরিবেশের প্রতিকূলতাকে জয় করার ক্ষমতা, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে দুঃসাধ্য সাধন করার ক্ষমতা আমাদের এটি মনে করিয়ে দেয় যে, প্রকৃতিতে থাকা ছোট্ট থেকে ছোট্ট প্রাণীগুলোও অনেক বড় অবদান রাখে প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখতে। আমরা যখনি প্রাণীজগতের বিভিন্ন রহস্য অন্বেষণ করতে যাই হানি ব্যাজারের ‘অকুতোভয়’ বৈশিষ্ট্য সব সময় পৃথিবীতে জীবনের স্হিতিস্থাপকতা এবং বিস্ময়ের প্রমান হিসেবে দাড়িয়ে থাকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং