1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

‘আমাকে লাশের সঙ্গে ফেলে দেওয়া হয়’

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩
  • ৪৭৯ বার পড়া হয়েছে

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ চলছিল। বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ করার মুহূর্তেই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে মঞ্চটি। মাত্র দেড় মিনিটের ব্যবধানে ১৩টি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ হয়, চারদিকে ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়।

তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনামলে এ নারকীয় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেত্রী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমানসহ মোট ২৪ জন। আহত হন দল ও সংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মী-সমর্থক।

সেই হামলায় গুরুতর আহত হন ২০০৪ সালে কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা রাশেদা আক্তার রুমা। বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী মহিলা লীগের সহ-সভাপতি এই নারী ভয়াবহ সেদিনের কথা বলতে গিয়ে আঁতকে ওঠেন। জাগো নিউজকে সেদিনের কথা তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের এই নারী নেত্রী।

রাশেদা আক্তার রুমা বলেন, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে আমরা তখন মিছিল নিয়ে কোতোয়ালি থানা থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে উপস্থিত হয়েছি। সেদিন বেলা ২টার দিকে আমরা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আসি। ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে আমাদের নেত্রী আসলেন। সেদিন প্রচন্ড গরম ছিল। সেই গরমের মধ্যে আমার সঙ্গে অনেক কর্মী ছিল।

তখন আমাদের মিছিলটা ছিল, আমরা স্টেডিয়ামের গেট থেকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে হেঁটে যাবো। বললাম এত গরম, তখন আমি আবার দেখলাম হানিফ ভাই ট্রাকের ওপরে পানি খাচ্ছিলেন। একজন বলছে আপা আমি পানি খাবো। আমি হানিফ ভাইয়ের হাত থেকে একটা পানির বোতল হাতে নিয়ে তাকে দিলাম, দিয়ে বললাম আপনারা আস্তে করে সাইড হয়ে বাইর হইয়া যান, বাইর হয়ে যান জিপিওর দিকে। তারা বলছে আপা আপনি? আমি বললাম যে, আমি আইভি আন্টির সঙ্গে আসছি।’

তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক তাদের এই কথাটা বলার সঙ্গে সঙ্গেই একটা ছেলে ১৬-১৭ বছরের হবে, পাঞ্জাবি পরা। সেই ছেলেটা আমার বাম দিক ঘেঁষে ভেতরে ঢুকছে, ট্রাকের সামনে। তখন আমি এই ছেলেকে বললাম তুমি এখানে ঢুকছো কেন? তখন আইভি আন্টি আমার ডান দিকে। আইভি আন্টি বললেন কথা বলো না। তখন বললাম আন্টি ছেলেটা এখানে ঢুকছে। তো আইভি আন্টি ছেলেটাকে বলছে এই তুমি ওই সাইডে দাঁড়াও ছেলেদের পাশে, এখানে দাঁড়ালে কেন? তখন ছেলেটা বলে আমার এখানে থাকার নির্দেশ আছে। তখন আইভি আন্টি বলছে তোমাকে কে নির্দেশ দিয়েছে।

‘তখন আমাদের পার্টি অফিসের সামনের যেই বিল্ডিংটা ওর ওপরে র‌্যাবের, র‌্যাব কি না আমি জানি না। কিন্তু কালো পোশাক পরা ছিল, মাথায় কালো কাপড় ছিল। ওই ছেলে হাত দিয়ে দেখাইছে র‌্যাবটাকে। উনি বলছে এখানে দাঁড়াইতে। তো আইভি আন্টি বলছে থাক দাঁড়াক। ওদের এগুলো পুলিশের ব্যাপারতো, থাক। এর দুই সেকেন্ডও যায়নি ওই ছেলেটা এখান থেকে চলে গেলো। দাঁড়ায় নাই। যখন আপা জয় বাংলা বললো তখন আমি আর আইভি আন্টি প্রথম যেই ডান পা বাড়ালাম, প্রথম বিস্ফোরণটা আমাদের ওপরেই পড়লো।’

তিনি বলেন, তখন ছিঁটকে আইভি আন্টি পড়ে যায়, আমিও পড়ে গেলাম। তখন আমার জ্ঞান ছিল না। যখন পড়ে গেলাম তখন স্প্লিন্টারগুলা গায়ে এসে পড়ছে। বাড়ি খেয়ে আমার ১৮টা দাঁত পড়ে গেলো। পরে ২২টা সেলাই হলো, বুকে সেলাই, হাতে সেলাই হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে রুমা বলেন, সরকার আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। চিকিৎসা, ভাতাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা আমাদের দিচ্ছে। আমাদের ৩৫ জনকে মিরপুর ১৩ নম্বরে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং