ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই ধারে লাগানো গাছের পরিচর্যা করছেন তিনি। এভাবে গত ৯-১০ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলার সড়কে তালগাছগুলো লাগিয়েছেন। এই কাজ করতে গিয়ে নিজের কৃষিজমি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল। তবুও তিনি থেমে থাকেননি। নিজের টাকায় আঁটি কিনে বিভিন্ন সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তার পাশে তালগাছ রোপণ করেন তিনি।
তাল গাছের যত্ন নেয়া প্রসঙ্গে খোরশেদ আলী বলেন, প্রতিদিন মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন সড়কে ১০০টি করে তাল গাছের চারা পরিচর্যা করি। তবে তালগাছগুলো কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক উপড়ে ফেলছে। গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন তিনি।
ঐ গ্রামের বাসিন্দা লতিফুর রহমান বলেন, তালগাছ পাগল ডাক্তার দীর্ঘদিন ধরে অনেক গাছ লাগিয়েছেন মানুষের উপকার করার জন্য। তিনি এই গাছগুলো লাগিয়েছেন নিজ খরচে। অনেক সময় তিনি লোক নিয়ে এই চারাগুলো রোপন করেন। তিনি সাধারণত রাতের বেলায় চারা রোপন করেন। কারণ দিনে চারা রোপন করলে কেউ চারাগুলো নিয়ে নিতে পারে বা এই আঁটি খেয়ে ফেলতে পারে। তাই তিনি রাতের বেলায় এই চারা রোপন করেন। সাধারণত রাত ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে চারা রোপন করেন তিনি।
একেই গ্রামের বাসিন্দা সাগর আলী বলেন, তালগাছ রোপণ করা নিয়ে তার পরিবারের মধ্যে অনেক সময় ঝগড়া হয়েছে। তিনি নিজ উদ্যেগে জমি বিক্রয় করেও তালের চারা রোপন করেছেন। এই মহৎ কাজ তিনি করে যাচ্ছেন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের উপকারের জন্য। সরকারের পক্ষ থেকে তাকে কোনো সহযোগিতা করলে তিনি আরো উৎসাহ পাবেন।
খোরশেদ আলী নিজ উদ্যোগে তালগাছের বীজ রোপন করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক। প্রকৃতির সৌন্দর্য, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাল গাছের ভূমিকা অনেক। ইউপি কার্যালয় থেকে তালগাছ রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, খোরশেদ আলীর তালগাছ লাগানো সামাজিক ভালো কাজের একটি চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমাদের জেলা প্রশাসন খোরশেদ আলীর তালগাছ লাগানোকে উৎসাহিত করতে সহযোগিতা করবে।