1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন

আর একজন ‘বাবলুর রহমান’ পেলে বিমানবন্দরটাও হতো”

আবু মহিউদ্দন, সাবেক ক্রীড়া অফিসার, ঠাকুরগাঁও:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩
  • ৪২৮ বার পড়া হয়েছে

আবু মহিউদ্দিন: তিনি ঠাকুরগাঁও পৌরসভার কমিশনার ছিলেন। বড্ড পরিশ্রম মানুষ, রাজনীতি করেন। জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। তার মতো অনেকেই বিত্ত বৈভবের নাগাল পেয়েছেন। তিনিও পেয়েছেন তবে সেজন্য অবশ্য তাকে অনেক ধাপ অতিক্রম করতে হয়েছে। বিত্ত বৈভব নিয়ে সমালোচনা থাকতে পারে। সেটা যারা করেন বা করবেন তাদের অনেকেই কিছু না জেনেই করবেন। তবে যে বিষয়টা বিবেচনার দাবী রাখে তা হলো বিত্তকে কি কাজে লাগিয়েছেন। তিনি ফিলিং স্টেশন করেছেন, হাসপাতাল করেছেন, পরিবহণ , জুট মিলস , ইট ভাটা , কাপড়ের দোকান , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে নিশ্চয় তিনি আয় করেন, সেটা সবাই করে। কিন্তু যেটা বিবেচ্য , তিনি সমাজের জন্য কি করেছেন? ভাবুনতো তার প্রতিষ্ঠানগুলো তো চালাতে হয়, সেখানে মানুষ কাজ করে,বিনিময়ে পারিশ্রমিক পায়। ১জন শ্রমিক / কর্মচারী মানে ১টি পরিবার চলে। হতে পারে প্রচুর বেতন তিনি দেননা বা দিতে পারেননা। কিন্তু পরিবারগুলো তো চলে। একজন রাজনীতিবীদ হিসাবে যা করনীয় তিনি তা করেছেন। প্রশ্ন করা যেতে পারে জেলা শহরে তার সমমানের বা তার চেয়ে বিত্তবান রাজনীতিক আর যে নাই তাতো নয় , তারা ক’ জনের কর্মসংস্থান করেছেন। অনেকে হয়তো রাজধানীতে বাড়ী করেছেন, কেউ করছেন, কেউ হয়তো বা বিদেশে বাড়ী বা ব্যবসা করেন। নিজ এলাকার জন্য কি করেছেন? স্থানীয় ভাবে কর্মসংস্থানের জন্য কিছুই কি করার ছিলনা? ঠাকুরগাঁওয়ের বন্ধ রেশম কারখানাটি লিজ নিয়ে তিনি চালু করেছেন। রেশম কারখানার জন্য তিনি কোন লোন নেননি। উদ্বোধনী অনুষ্টানে ঠাকুরগাঁয়ের গণ্য মান্য মানুষদের সামনে প্রকাশ্যে বলেছেন , মাসের ১/২ তারিখে তিনি কর্মচারীদের বেতন দিবেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন সব কিছু ছাপিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কর্মসংস্থান করে তিনি তার দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা আশা করবো অন্যান্য রাজনীতিবীদ যারা এ বিষয়টা বিবেচনায় আনেননি, তারা তাকে অনুসরণ করবেন। বাবলুর রহমানের উদ্দেশ্য সফল হোক এটাই কামনা করি।
বাবলুর রহমান সাহেবদের ৪ ভাইদের মধ্যে যে বন্ধন অটুট আছে তা অনুকরণযোগ্য। ৪ ভাই মিলেই এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি তার ভাইদের বঞ্চিত করেননি, বরং ক্ষেত্র বিশেষে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমাদের সমাজের প্রচলিত বিষয় হলো ভাইদের বা বোনদের কিভাবে বঞ্চিত করা যাবে তার ফন্দিফিকির চলে।
বাংলাদেশে ২টি রেশম কারখানা ছিল। রেশমী কাপড় এবং জামদানী , মসলিন কাপড় তৈরিতে জুড়ি ছিলনা এদেশের বয়ন শিল্পীদের। ঠাকুরগাঁও কারখানার উৎপাদিত রেশমী কাপড় রাজশাহীর চেয়েও ভাল ছিল। ঠাকুরগাঁওয়ে কোন ভারী শিল্প নাই। কৃষি নির্ভর এই জেলায় সামান্য পরিচয় দেবার মতো এই কারখানাটি ছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী সরকারের একজন মন্ত্রী প্রথমেই ঠাকুরগাঁয়ের এই কারখানাটি বন্ধ করে দেন। কারখানাটি চালু হলো, এটা আরো ১০ বছর আগে চালু হওয়ার কোন সমস্যা ছিল বলে আমরা মনে করিনা। এ রকম ১০ টা কারখানা এক মাসেই চালুর মতো সামর্থ বাংলাদেশ অর্জন করেছে অনেক দিন আগে। আমরা মনে করেছিলাম এর জন্য মানব বন্ধন হবে , স্থানীয়ভাবে হরতাল হবে। আর এসব করবে সরকার বিরোধী রাজনীতিকরা। কিন্তু তারাইতো বন্ধ করেছিল , মন্ত্রীত্ব থাকতেও বিমান বন্দরটা চালুর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাহলে এর জন্য আন্দোলন করবে কিভাবে। লেট বেটার দেন নেভার।
আমরা যদি আর একজন বাবলুর রহমানকে পেতাম যিনি ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরটা চালু করার সাহস দেখাবেন। ঠাকুরগাঁও বিমান বন্দরতো নুতন করে করতে হবেনা। সবই আছে কেবল রানওয়েটা মেরামত করতে হবে। সবচে কম বিনিয়োগে একটা বিমান বন্দর চালু হতে পারে। ঠাকুরগাঁয়ের অনেকের নাকি অনেক টাকা হয়েছে। জনশ্রæতি আছে কেউ কেউ নাকি আবার ইন্ডিয়াতে জমি জমা ব্যবসাপাতির ব্যবস্থা করেছেন। বেগম পাড়াতেও থাকা বিচিত্র নয় । সুইস ব্যাংকের খবর তো আমাদের জানার উপায় নাই। অবশ্য আমরা তা বিশাস করতে চাইনা। এদের মধ্যে যাদের আর্থিক সামর্থ হয়েছে তিনি এককভাবে বা কয়েকজন মিলে এটা চালু করা অসম্ভব বলে কেউ মনে করেনা। জেলার উন্নয়নের কমিটমেন্ট থাকলেই তা সম্ভব। বিমান বন্দর চালু মানে কিছু মানুষের আরামে ঢাকা যাওয়া আসা তা নয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে মানুষজন আসবে, ব্যবসা বাড়বে, কর্মসংস্থান হবে। আপনারা নিশ্চয় খবর রাখেন এবারে ঈদুল আযহায় মাংশ কাটার জন্য কসাইরা দলে দলে সৈয়দপুর হয়ে বিমানে ঢাকা যাতায়ত করেছে। আমরা একজন ‘বাবলুর রহমানের’ জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং