1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠিত। সভাপতি মান্নান সাধারণ সম্পাদক আসাদ চীনের হাসপাতাল গাইবান্ধায় স্থাপনের দাবি ছাত্রজনতার দেবীগঞ্জে চায়না বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করলেন ডিসি দীর্ঘ ১৯ বছর পর বোদা উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন বোয়ালখালী সদরে গোমদন্ডী পাইলটস্কুলের হলরুমে জিয়া স্মৃতি পরিষদ’র উদ্যোগে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বালিয়াডাঙ্গীতে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে জোর পূর্বক গ্ৰাম্য সালিশ বিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ দেখানো এক আলোকবর্তিকা — সাইমুন মজুমদার দেশে বাড়ছে রাজনৈতিক – আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল চীনের হাসপাতাল।। পঞ্চগড়ে করার দাবিতে উত্তাল পঞ্চগড়।। মুসল্লিদের অবস্থান মানববন্ধন আধুনিকতার ছোয়ায় হারিয়ে গেছে শৈশবের খেলাধূলা

সাবরেজিস্ট্রি অফিসের লোক জড়িত জমি ‘বিক্রি’ হয়ে গেছে— আসল মালিক জানেনই না

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
চট্টগ্রামে নিপুণ কৌশলে জাল দলিল বানিয়ে ভুয়া মালিক সাজিয়ে গোপনে জমি কব্জা করে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একাধিক চক্র। মিথ্যা দলিল ও নামজারি দিয়ে জমি দখল ও বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে— অথচ মূল মালিক এসবের কিছুই জানেন না। এই জালিয়াতচক্রে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছাড়াও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অনেক কর্মকর্তাও জড়িত।
চট্টগ্রামের উত্তর পাহাড়তলী মৌজার বায়েজিদ লিংক রোড়ের এশিয়ার উইমেন্স ইউনিভার্সিটির পাশে ১৫ শতক জায়গার মালিক মোহাম্মদ মোমেনুল ইসলাম। ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০ জুন জমিটি বিক্রি করা হয়েছে পাঁচলাইশ এলাকার মোহাম্মদ ইয়াকুবের কাছে। ইয়াকুবের নামে নামজারি খতিয়ানও করা হয়ে গেছে। ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ওই জমি ‘বিক্রি’ হয়।
অথচ জমির মূল মালিক মোমেনুল ইসলাম এসবের কিছুই জানতেন না। মূলত জালিয়াতি করে অন্য এক ব্যক্তিকে মালিক দেখিয়ে জমিটি দখলে নিতে চেয়েছেন মো. ইয়াকুব। জালিয়াতি করে উল্টো জমির মালিককে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন ইয়াকুব।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র দরকার হয়। সাব রেজিস্ট্রারের যোগসাজশ ছাড়া ভুয়া স্বাক্ষর ও পরিচয়পত্র দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব নয়।
বিষয়টি জানাজানির পর জমির মালিক জমির মালিক মোমেনুল ইসলাম বাদি হয়ে ইয়াকুবসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর বিভিন্নভাবে মোমেনুল ইসলামকে হুমকি ও জমি বিক্রি করে করার জন্য চাপ দেয় ইয়াকুব। ইয়াকুব এশিয়ান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালামের ভাই। নিজেকে ‘বড় ব্যবসায়ীর ভাই’ পরিচয় দিয়ে জোর করে জমি রেজিস্ট্রি নেওয়ার হুমকিও দেন ইয়াকুব।
জমির মালিক মোমেনুল ইসলামের ব্যবসায়িক অংশীদার ওয়াহিদুর রহমানকে ফোন করে জমি বিক্রি করতে চাপ দেন ইয়াকুব। মোবাইলে পাঠানো এক ক্ষুদেবার্তায় ইয়াকুব বলেন, ‘কাইন্ডলি মোমেন সাহেবের সাথে একটু কানেক্ট করে দিন। ওনাকে কোনো ঝামেলা করতে হবে না। আমি ওনার জায়গা বুঝিয়ে দেবো বা ওনাকে ন্যায্য মূল্য দেবো। আমি বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট সালামের ভাই।’
মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান গং থেকে ১০৭৪ সাফ কবলা মূলে ৩০ শতক জমি কেনেন মোমেনুল ইসলাম ও মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান। ৩০ শতক থেকে ১৫ শতক জমির মালিক মোমেনুল ইসলাম। যার নামজারী খতিয়ান নম্বর ১১৯৮।
২৪ আগস্ট ওই ১৫ শতক জমির খাজনা দিতে গেলে দেখা যায়, ২৪৭০ নং জাল দলিলে ওই জমির ‘মালিকানা পরিবর্তন’ হয়েছে। নতুন ‘মালিক’ মো. ইয়াকুব। অথচ জমির আসল মালিক মোমেনুল ইসলাম এসবের কিছুই জানেন না।
এরপর চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৪/৪১৯/৪২০/৪০৬/৪৬৫/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬ ধারায় মামলা করেন মো. মোমেনুল ইসলাম। এতে জাল দলিল গ্রহীতা মো. ইয়াকুব এবং দুই সাক্ষী মুহাম্মদ মাসুদ আল মামুন ও রাজীব মজুমদারকে আসামি করা হয়।
এছাড়া চট্টগ্রামের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে জাল দলিল বাতিলের মামলাও করেন মোমেনুল ইসলাম। এতে ইয়াকুবসহ পাহাড়তলীর সাব রেজিস্ট্রার ও চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রারকে আসামি করা হয়।
মোহাম্মদ মোমেনুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ১৫ শতক জমির মালিক আমি। আমার ম্যানেজার ২৪ আগস্ট ১৪৩০ সনের ভূমি উন্নয়ন কর দিতে গেলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। আমার নাম, ঠিকানা ও জাল স্বাক্ষর দিয়ে দলিল করা হয়েছে— যা আমি কিছুই জানি না। আমি নালিশী দলিল লেখার জন্য কোনো দলিল লেখক, সাক্ষী ও শনাক্তকারী নিযুক্ত করিনি। এখন বিভিন্ন মাধ্যমে জমি বিক্রির জন্য থ্রেট দিচ্ছেন ইয়াকুব।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইয়াকুব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মোমেনুল ইসলাম নামের একজন থেকে আমরা জমিটি কিনেছি। নামজারিও হয়েছে। পরে বিজ্ঞপ্তিতে দেখলাম ওই ব্যক্তি নাকি আসল মোমেনুল ইসলাম নয়। সে যদি আসল মালিক না হয়, আমরা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করবো। আসল মালিকের কাছে জমি বুঝিয়ে দেবো।’
পাহাড়তলী ভূমি অফিসের সাব রেজিস্ট্রার মো. রফিক উদ্দিন বলেন, ‘দলিল লেখকদের মাধ্যমে দলিল যাচাই-বাচাই করে আমাদের হেডক্লার্ক। সাব রেজিস্ট্রার দলিলের ছবির ব্যক্তির ছবি মিল আছে কি-না, সেটি দেখে সবকিছু ঠিক মনে হলে রেজিস্ট্রি হয়।’
জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি যাচাই করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি আজ থেকে ২০-২২ বছর আগের। এখনের ছবির সঙ্গে মিল থাকবে না— এটা স্বাভাবিক। সব কাগজপত্র ঠিক আছে বলে মনে হয়েছে, তাই রেজিস্ট্রি হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ উত্থাপন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এই বিলে বলা হয়েছে, ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনও ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ কারেও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনও দলিলে সই করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। কোনও দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনও অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজাও হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনও মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করার সাজাও একই। এছাড়া প্রতারণামূলকভাবে কোনও ব্যক্তিকে কোনও দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং