1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
ঠাকুরগাঁওয়ে দুর্নীতির কবলে হারিয়ে যাওয়া ‘ছাগল হাট’ পুনর্বহালের জন্য পৌর প্রশাসকের নিকট আবেদন ভোট চুরিতে জড়িত কর্মকর্তারা এখনো বহাল, এদের সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয় : মাওলানা ইকবাল হোসাইন প্রকাশ পেল প্রিয়া অনন্যা ও নিলয়ের ‘তুমি আমি রাজি’ রুহিয়া থানা প্রেসক্লাবের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত আনিস কে বিয়ে করতে দিলো না পুলিশ দীর্ঘ ১৬ বছর পর তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন।।  রঞ্জু সভাপতি শাহীন সম্পাদক নির্বাচিত ঘোড়ার ঘূর্ণি প্রশ্ন //  সাইফুল ইসলাম সরকার পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবকে নিয়ে ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট : থানায় তিন সাংবাদিকের এজাহার ঠাকুরগাঁওয়ে জাকজমক আয়োজনে টি ২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু ভবানীগঞ্জ সরকারি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধানের বিদায় ও সংবর্ধনা 

হরিপুরে ভাঙা টিনের ঘরে চলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৩০০ বার পড়া হয়েছে

মিজানুর রহমান হরিপুর(ঠাকুরগাঁও)।। ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার হরিপুর সদর ইউনিয়নে অবস্থিত এ বিদ্যালয়টির নাম তোররা সাতাহাজারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১০৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ২০ জোড়া বেঞ্চ। এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থায়ী বা পাকা ভবন নেই। ভাঙা টিনের ঘর,চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল ভাঙাচোড়া কিছু বেঞ্চ ও চেয়ার-টেবিল। ঠাসাঠাসি শ্রেণি কক্ষ। মাটির মেঝে নিচু মাঠ। এ রকম আরও অনেক দৈন্যদশা নিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হরিপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের কোনো ছোঁয়াই লাগেনি অজো পাড়াগাঁয়ের এ স্কুলটিতে। অথচ তোররা বশালগাওসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের অন্তত ১০৭ জন শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে নিয়মিত পড়ালেখা করছে।

জানা গেছে,উপজেলার তোররা-বশালগাও সড়কের পূর্বপাশে তোররা সাতাহাজারা গ্রামে ২০০৯ সালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুলটির দেড় কিলোমিটার আশপাশে আর কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।

প্রথমদিকে এটি ছিল রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১০৭ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। আর শিক্ষক আছেন চারজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তোররা-বশালগাও সড়কের পূর্বপাশে খুবই নিচু জায়গায় একটি ঝুপড়ি ভাঙা টিনের ঘর দিয়ে বিদ্যালয়টি তৈরি। টিনশেড ঘরের চারপাশের বেড়াগুলোও জরাজীর্ণ। মেঝে এখনও মাটির। তার উপর ঠাসাঠাসি করে রাখা মাত্র ২০ জোড়া বেঞ্চ। এগুলো নিয়েই তিনটি শ্রেণিকক্ষ।

শিক্ষকদের বসার চেয়ার-টেবিলগুলোও ভাঙা এবং নড়বড়ে। পাকা মেঝে না থাকায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কোনো কক্ষ এবং শিখন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়নি। পঞ্চম শ্রেণির পাঠদানের আগে ওই কক্ষের বেঞ্চে বসিয়েই প্রাক-প্রাথমিকের পাঠদান করা হয়।

এদিকে, টিনশেড ঘরের মেঝে আর সামনের মাঠের উচ্চতা প্রায় সমান। সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠের পানি এসে ঘরের মেঝেতে গড়াগড়ি খায়। বৃষ্টির সময় চালের ছিদ্র দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে। অফিস কক্ষের কাগজপত্র ভিজে যায়। তখন পাঠদান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর বর্ষার শুরুতেই মাঠ এবং বিদ্যালয়ের মেঝে সম্পূর্ণ ডুবে যায়। বর্ষাকালে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম অঘোষিতভাবে বন্ধ থাকে।

স্কুলটির সহকারি শিক্ষিকা মারুফা খাতুন জানান, বতর্মানে প্রচন্ড তাপদাহে শিক্ষার্থীদের টিনের চালের নিচে পড়াশোনা করতে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে এতে করে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং বর্ষাকালে বিদ্যালয়ের ঘরসহ পুরো মাঠে প্রায় এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত পানি ওঠে। বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট এবং স্থায়ী পাকা ভবন নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আখি আক্তার বলে, বর্তমানে প্রচন্ড তাপদাহে ঝুপড়ি টিনের ঘরে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয় এবং অনেক ছাত্র ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।।

একই ক্লাসের ছাত্রী মরিয়ম বলে, ‘বৃষ্টির সময় টিনের ছাদ গলিয়ে আমাদের মাথার উপর পানি পড়ে। ঝড় এবং বজ্রপাতের সময় খুব ভয় লাগে।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রধান জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি সভাপতি রয়েছি
নতুন ভবনের জন‍্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়টির দুরাবস্থার কারণে এলাকার অবস্থাসম্পন্ন পরিবারগুলো তাদের ছেলেমেয়েদের শহরাঞ্চলে স্থানান্তর করে লেখাপড়া করাচ্ছে। আমাদের মতো গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েরাই এখানে পড়ালেখা করছে। আমরা বিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রচন্ড তাপে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। ‘ঝড়ের দিনে অভিভাবকরা শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। কারণ ঘরটির অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। শিক্ষার্থীরা আসলেও আকাশে মেঘ দেখলেই তারা বাড়িতে চলে যেতে যায়।’বিদ্যালয়টির দৈন্যদশা সম্পর্কে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে অবগত আছেন।’

উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদ ইবনে সুলতান জানান, তোররা সাতাহাজারা প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মোট ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন আমি ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি।
বিদ্যালয়টির আসলেই করুণ অবস্থা। ভবন না থাকায় জরাজীর্ণ টিনের ঘরে প্রচন্ড তাপদাহে ক্লাস করতে ছাত্র-ছাত্রীদের খুব কষ্ট হয়। অচিরেই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং