1. info@www.dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
সূর্য বহুরূপী //  রিতুনুর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ঝালকাঠির নিহত ১০ পরিবারকে জেলা পরিষদের ২০ লাখ টাকা সহায়তা প্রদান পঞ্চগড়ে দুই মামলার রায় আদালত চত্বরে হট্টগোল ঠাকুরগাঁওয়ে ‘গায়েবি’ মাদরাসার খোঁজে দুদকের অভিযান ছাত্রত্ব নেই কবির হাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে খালার সঙ্গে প্রতারণা ইউপি চেয়ারম্যানের পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠিত। সভাপতি মান্নান সাধারণ সম্পাদক আসাদ চীনের হাসপাতাল গাইবান্ধায় স্থাপনের দাবি ছাত্রজনতার দেবীগঞ্জে চায়না বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করলেন ডিসি দীর্ঘ ১৯ বছর পর বোদা উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

পঞ্চগড়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের “বাকীর হাট’ বাকীতে পণ্য পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষ

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৬৯ বার পড়া হয়েছে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি।। “যা প্রয়োজন এখন বাকীতে নিন, পরে সামর্থ্য হলে অন্য কোন অভাবীকে ফেরত দিন” এই স্লোগানে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পঞ্চগড়ে ‘‘বাকীর হাট ” নামে সুপারশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মূলনীতি ছিল “বাকী ভেবে নিয়ে যান,পরে অভাবীকে দাম দিয়েন”। আবার ‘বাকী চাহিয়া লজ্জা দেবেন না’ এমন একটি সাধারণ বাক্য প্রায় দোকানে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়। বাকীখোরদের কাছ থেকে মুক্তি পেতে সাধারণত এমন কাজ করে থাকেন দোকানীরা। তবে এমন ম্যাসেজ দেখে বাকীখোরদের থামানো না গেলেও নিম্ন আয়ের মানুষ কিছুটা অস্বস্থিতে ভোগেন। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মাঝে দুঃস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন বিপন্ন। আয় ব্যয়ের হিসাব মেলাতে অনেকের কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় কিছুটা ধার দেনা করে দোকান থেকে পণ্য না পেলে অভুক্ত থাকতে হয় তাদের।
সাধারণ দোকানদাররা বাকীতে পণ্য দিতে না চাইলেও এবার ঠিক উলটো কাজটি করতে যাচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। গরীব ও দু:স্থদের বাকীতে পণ্য দিতে এবার তারা আয়োজন করেছে ‘বাকীর হাট’।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) পঞ্চগড়ে আয়োজিত দিন ব্যাপী এই কর্মসূচীতে প্রায় ২৫০ পরিবার বাকীতে পণ্য কেনার সুযোগ পায়।
এ “বাকীর হাট” সুপারশপ থেকে নির্দিষ্ট টোকেন নিয়ে দুস্থ ও অসহায় মানুষজন নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী ৬০০টাকার ভিতরে বাকীতে বাজার করেছেন। এ সুপারশপে ২১টি পণ্যের সমাহার ছিলো। এ সকল পণ্যে যেমন..চাউল,ডাল, চিনি,তেল, মাছ, মুরগী, মিস্টিকুমুড়া, চাল কুমুড়া, লাই, ব্যাগ, জুতা, ছাতা, নুডলস, বিস্কুট, আটা, সুজিসহ ২১ টি পণ্য কিনতে পেরেছেন ক্রেতারা।
বিদ্যানন্দের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুখ আহমেদ জানান, ‘বাকী চাহিয়া লজ্জা দেবেন না’ এই স্লোগানের পরিবর্তে ‘বাকী চাহিয়া লজ্জা পাবেন না’ এই স্লোগানটি তারা প্রমোট করছেন হত দরিদ্র মানুষের জন্য। এই পরিবারগুলোর আজকে টাকা নেই, কিন্তু একদিন তাদের টাকা হবে। সেদিন তারা এই টাকা পরিশোধ করবে। তবে বিদ্যানন্দকে নয়, সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে অন্য কোন অভাবীকে। এমন একটি শর্ত দিয়েই ৬০০ টাকার পণ্য দেওয়া হচ্ছে। তবে না দিলেও কোন আপত্তি নেই। বাজার শেষে প্রতিটি ক্রেতার নাম ও বাকীর পরিমাণ লিখে একটি আঙ্গুলের ছাপ নিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা যা দিয়ে প্রতীকীভাবে এই বাকীর কথা খাতায় লিপিবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। ভোজ্যতেল, চাল-ডালসহ ২১ টি পণ্যের সমাহার ছিল সুপারশপে। নির্দিষ্ট টোকেন নিয়ে দুস্থ ও অসহায় মানুষজন নিজেদের চাহিদা মতো বাজার করেছেন।। মুলত মুলত দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বাজারের আয়োজন করা হয়েছে।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিটি সেবামূলক কাজের পেছনে একটি বার্তা থাকে। বাকীর হাটের মাধ্যমে তারা সমাজের মানুষ যেন আরেকজন মানুষকে সাহায্য করে। এমনই একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে। একই সাথে সাহায্য চাওয়া কোন লজ্জার বিষয় না। বরং সাহায্যপ্রার্থীকে সাহায্য করা মানবিক একটি দায়িত্ব। আর এই দায়িত্বের কথাই বিদ্যানন্দ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে।
জালাসী থেকে সুপারশপে বাজার করতে আসা আজিরন বেগম (৬০) বলেন,আজকে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সুপারশপে এসে নিজের পছনন্দ মতো মুরগী,ডিম, চাউ, তেল পেয়ে আমি অনেক খুশি।
বলেয়াপাড়া থেকে আসা ভ্যান চালক তোফাজ্জল হোসেন (৬২) মুরগী,চাল, তেল আর ডিম নিয়েছেন। অনেকদিন পর মুরগীর গোশত দিয়ে ভাত খেতে পারবেন বলে খুবই খুশি তিনি।
পঞ্চগড় চেম্বার ভবনে বাকীর হাটে পণ্য কেনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রিয়াজউদ্দিন। তিনি বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আজকের এই “বাকীর হাট ” সুপারশপ অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। বিদ্যানন্দের এই সকল মানবিক কার্যক্রমগুলো দেখে আমি খুবই আনন্দিত। সর্বোপরি বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এই কনসেপটি খুবই চমৎকার।
এ সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ আহমেদ, বিদ্যানন্দের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুখ আহমেদ, কর্মসূচি সন্বয়কারী মো. হাসিব মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যানন্দের সদস্যরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জরিপের মাধ্যমে অভাবী পরিবার চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট কার্ড প্রদান করে। সে কার্ড দেখিয়ে পরিবারগুলো ‘বাকীর হাট’ থেকে কেনাকাটার সুযোগ পায়।
দেশ বিদেশে ভিন্নতর ও অভিনব সব আইডিয়া নিয়ে সেবামূলক কাজ করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে বিদ্যানন্দ। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে কেউ যখন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেনা তখন জীবনবাজি রেখে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসমরে যুদ্ধ করে সাধারণ মানুষের ভালবাসা অর্জন করে নেয় এই প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবায় তাদের অসামান্য সব অবদানের জন্য ২০২৩ সালে সরকার তাদের একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও ২০২২ সালে সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় কর্তৃক জাতীয় মানবকল্যান পদক ও ২০২১ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কতৃক “কমনওয়েলথ পয়েন্টস অফ লাইট” পদকে ভূষিত হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। #

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং