ষ্টাফ রিপোর্টার।। স্যাংশন তত্ত্বাবধায়ক থোরাই, শেখ হাসিনার কর্মী কি এসবে ডরাই? এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তাকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিক প্রদানের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
কোরান তেলওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে মূল জনসভার কার্যক্রম শুরু হয় বিকেল চারটায়। তবে এর আগে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী পুরুষের স্থানীয় যানবাহনে করে ব্যান্ড পার্টি নিয়ে ব্যানার ফেস্টুনসহ নানান শ্লোগান দিতে দিতে চিনিকল মাঠে এসে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে বিশাল এই মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। এই জনসভায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য গত ৯ সেপ্টেম্বর আটোয়ারি পাইলট স্কুল মাঠ ও ২৮ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়া সরকারি কলেজ মাঠেও হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জনসভা থেকে এবার পঞ্চগড় এক আসনে মুক্তাকে নৌকা’র মাঝি করার দাবী তোলা হয়। অতীতে পঞ্চগড়ের কোনো রাজনৈতিক নেতার সমাবেশে এতো মানুষের জমায়েত হয় নি। তাই পঞ্চগড়ের মানুষের মুখে মুখে এখন এক কথা “ এই জনসভাগুলোতে হাজার হাজার নারী পুরুষে তরুণ তরুণী, কৃষক শ্রমিকের উপস্থিতিই বলে দেয় মুক্তার প্রতি পঞ্চগড় এক আসনের মানুষের আগাম রায়।”
জেলা আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে তেঁতুলিয়া, আটোয়ারি উপজেলা ও পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জনসভায় বক্তব্য রাখেন।
মুক্তা বলেন,“বেগম জিয়া ১৯৯৩ সালে বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তির সুপার হাইওয়ে সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হয়নি! অথচ সেসময় আমাদের দেশকে বিনামূল্যে এই সুযোগ দেয়া হচ্ছিল! পরবর্তীতে মিলিয়ন ডলার খরচ করে সাবমেরিন সুপার হাইওয়েতে যুক্ত হয় বাংলাদেশ! মির্জা ফখরুলও একই ভাবে পারমানবিক বিদ্যুৎ এর বিরোধিতা করে বলেন ইউরেনিয়াম হচ্ছে ক্যামিকেল! কারণ বিএনপির লক্ষ “টেক ব্যাক”করে অন্ধকারে যাওয়া! আর শেখ হাসিনা বলেন, ‘লুক ফরোয়াড বাংলাদেশ’ ২০৪১ এ দেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ!”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাঈমুজ্জামান মুক্তা বলেন,ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষের পক্ষে ইহুদিদের জুলুমের বিপক্ষে সাহসী প্রতিবাদী নেতার নাম শেখ হাসিনা। আর অন্যদিকে ফিলিস্তিনি নারী শিশু নিরিহ বেসামরিক মানুষের রক্তের দাগ মার্কিনিদের হাতে! যেমন করে ৭১ ও ৭৫ এ রক্তমাখা খুনিদের হাতে হাত মিলিয়েছিল আমেরিকা! আর তাই যেই আমেরিকা ইজরাইলিদের বন্ধু, যেই আমেরিকা হিরু আলমের বন্ধু তাদের ভিসানীতি, স্যাংশন বাংলার মানুষ তোয়াক্কা করে না! বাংলার মানুষ যেমন করে বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলেন তেমনি শেখ হাসিনার সাথেও আছেন।আপনারা গুজবে কান দেবেন না! যথা সময়েই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।”
জনসভায় অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম বলেন-“ আমার বাড়ির পাশেই পঞ্চগড় চিনিকল মাঠ। এই মাঠে কত জনসভ দেখেছি হিসেব নেই, চিনিকল এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম বলেন, এই জনসভা অনন্যা এক জনসভা। পঞ্চগড়ে অন্য রাজনৈতিক জনসভার চেয়ে এটা আলাদা হয়েছে কেননা আওয়ামীলীগ ছাড়াও পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট আইনজীবি, চিকিৎসক, শিক্ষক, কৃতি খেলোয়াড়, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, তরুণ শিক্ষার্থী, হাজারো নারী, বিভিন্ন শ্রমিক, কৃষক এই সমাবেশে অংশ নিয়েছে।”
চিনিকল এলাকার বাসিন্দা চিনিকলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতপক্ষে মুক্তা সাহেব একজন ভালো মানুষ ও ভালো নেতাও। স্বাধীনতা পরবর্তী এই প্রথম কেউ পঞ্চগড়ে নৌকার তৃনমুলের সমর্থক ও কর্মীদের চাঙ্গা ও উজ্জীবিত করতে পেরেছেন। আর সেই ব্যক্তিটি হলেন নাইমুজ্জামান মুক্তা। মুক্তা সাহেব যেভাবে গ্রাম গঞ্জে, হাট-বাজারে ছুটে বেড়াচ্ছেন, নৌকার ক্যাম্পেইন করছেন, উন্নয়নের ক্যাম্পেইন করছেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিপদে পাশে থেকেছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। মুক্তার মত এমন ব্যক্তি যদি পঞ্চগড়-১ এর সংসদ সদস্য হোন তবে তা হবে পঞ্চগড়বাসীর গর্বের বিষয়। আমি একজন সমাজকর্মী হিসেবে এমনটাই বিশ্বাস ও আস্থা রাখি।
নানা রকম সৃজনশীল উদ্যোগ, তরুনদের চাহিদা অনুযায়ী ডিজিটাল ক্যাম্পেইন, তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে রাত্রীযাপন ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের জন্য নাঈমুজ্জামান মুক্তা পঞ্চগড়ে সর্বজনের গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে মুক্তা।