শহীদুল ইসলাম শহীদ,পঞ্চগড়।।পঞ্চগড়ে ডায়াবেটিক সমিতি ও মকবুলার রহমান ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সভা আজ সোমবার বিকেলে হাসপাতালের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সমিতির আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক সাবেত আলী সভাপতিত্ব করেন। সভায় বার্ষিক আয় ব্যয়ের রিপোর্টসহ নানান বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় সমিতির সংবিধান প্রণয়ন জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সভায় আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ আরো ছয় মাস বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংবিধান অনুমোদনের পর নতুন কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, প্রতিষ্ঠিতা সদস্য ও জীবন সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে মরহুম সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অনিয়মে ডুবতে বসেছিল পঞ্চগড়ের ডায়াবেটিক সমিতির হাসপাতাল। অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতায় প্রায় বন্ধ হতে চলছিল পঞ্চগড় ডায়াবেটিক সমিতি ও জেনারেল হাসপাতাল। বিশাল অবকাঠামো ও আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও পরিচালনা কমিটির উদাসীনতার কারণে উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
সমিতির সদস্য ও স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছিল নির্বাহী কমিটি। এমন একটা পরিস্থিতিতে আহ্বায়ক কমিটি দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন এসেছে। সামনে আরো পরিবর্তন আসছে।
১৯৯৩ সালে পঞ্চগড় শহরের অদূরে মিঠাপুকুর এলাকায় ১ একর ৬২ শতক জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় পঞ্চগড় ডায়াবেটিক সমিতি। সেই সময় জেলার কয়েক হাজার আখচাষি এবং ব্যবসায়িসহ সমাজের নানা স্তরের মানুষের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সরকারী অনুদানে নির্মিত ৪ তলা ভবন ২০১৩ সালে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য সরকারি উদ্যোগে অফিস এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ডাক্তার কক্ষ, নার্সদের কক্ষসহ রোগীদের জন্য উন্নত মানের বিছানা প্রদান করা হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ৩৫ সদস্যের একটি নির্বাহী কমিটি দ্বারা এই হাসপাতাল পরিচালিত হলেও ২০২০ সালে জেলা প্রশাসককে বাদ দিয়ে কমিটির সভাপতি হন পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান। তবে এই কমিটি অনুমোদন দেয়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর।
২০১৮-১৯ সালে সরকারী অনুদানে ৭ কোটি টাকা মুল্যের আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনা হয়। ব্যবহারের অভাবে অধিকাংশ যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে চলেছে। ইতোমধ্যে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অনেক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিছু ব্যবহার হচ্ছে। কোন চেইন অফ কমান্ড ছিল না এখানে।
হাসপাতালের কেনাকাটা ও হিসাব-নিকাশেও অসচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্রসহ অন্যান্য লাভজনক খাত থেকে পুরো লভ্যাংশ ডায়াবেটিক সমিতির হিসাবে জমা হয় না। ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্রটি ডায়াবেটিক সমিতি দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি ব্যক্তিগতভাবে পরিচালনা করছেন হাসপাতালের হেলথ এডুকেটর রাহাত পারভেজ অপু। এই কেন্দ্রে হিসাবরক্ষক সোহেল রানা তালুকদারের রয়েছে পার্টনারশীপ। বর্তমানে অনেক টাকার মালিক এরা।
হাসপাতালের অন্যান্য কর্মচারীরাও নিয়ম বহির্ভূতভাবে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট অন্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে। অপুর হেলথ এডুকেটর পদে চাকরি করার সার্টিফিকেট নেই। হিসাব-নিকাশেও সমস্যা আছে। একটা সিন্ডিকেটের হাতেই যেন সবকিছু নিয়ন্ত্রিত ছিল। কোন জবাবদিহিতা নেই। আজীবন সদস্য হয়েও গত ১০ বছরে কোন মিটিংয়ের চিঠি পাননি।
এখানে আয়ের চেয়ে ব্যয় দেখানো হয় বেশি। সমিতির অর্থ লুটপাট হয়। এই প্রতিষ্ঠানের অনেক সম্পদ রয়েছে। এগুলো পরিকল্পিতভাবে ব্যবহৃত হলে হাজার হাজার মানুষের উপকার হতো। চিকিৎসার জন্য রংপুর, দিনাজপুর যেতে হবেনা। এই প্রতিষ্ঠানে ৪ জন নিয়মিত ও ২ জন গেষ্ট ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হেলথ এডুকেটর রাহাত পারভেজ ও একাউন্টেন্ট সোহেল রানা তালুকদার। তারা বলছেন সকল অভিযোগ মিথ্যা। এমন নানান অভিযোগের পর গত ১২ আগস্ট পুরনো কমিটি ভেঙে দিয়ে জেলা প্রশাসক সাবেত আলীকে আহবায়ক ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়কে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি কাজ শুরু করেছে। অপু ও আকতারসহ বিস্তারিত আসছে।
প্রকাশক/সম্পাদক :- শাওন আমিন।। ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক :- মোঃ গিয়াস উদ্দিন।। নির্বাহী সম্পাদক :- ঝড় আমীন।। প্রধান কার্যালয় :- হালিশহর, চট্রগ্রাম। মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২০৬১১৬৩ ঢাকা কার্যালয়:-বাসা নং ৫১/৩,ধানমন্ডি ৩/এ, ঢাকা।-১২০৯ মুঠোফোন :- +৮৮০১৭১২৪১৫৮৫৩,+৮৮০১৫৮০৮২০৬৬৩,+৮৮০১৭১২০৬১১৬৩
E-mail :- newszhor@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত. বাংলাদেশ হোস্টিং