।। বিশাল রহমান ।। আমি মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার বিরুদ্ধে আমার অবস্থান। জ্যাকব মিল্টন যা বলেছেন তা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয় বরং তথ্য সন্ত্রাস।
তাঁর সদয় অবগতির জন্য তাঁকে বিনয়ের সঙ্গে জানাতে চাই….
১।সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অরুণাংশু দত্ত টিটোদা আমার প্রতিবেশী। তাঁর সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আপনি যে দশ কিংবা এগারো কোটি টাকার বিনিময়ে তাঁর বাসা রক্ষা করার কথা বলেছেন, তা ভিত্তিহীন এবং সর্বৈব মিথ্যা। টিটোদার স্থাবর ও অস্থাবর যাবতীয় সম্পদ বিক্রি করে দশ কোটি টাকা পাওয়া অসম্ভব। গত কয়েক বছর ধরে তিনি তাঁর প্রয়াত স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে কপর্দকহীন হয়ে পরেন।সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে তিনি তাঁর বাড়ী মর্টগেজ রেখে ঋণ নিয়ে নির্বাচন করেও টাকার অভাবে পরাজিত হন।কাজেই তাঁর পক্ষে এত টাকা দেওয়ার বিষয়টি আরব্য রজনীর কাহিনীকেও হার মানাবে।
#তবে টিটোদার বাড়ী রক্ষা করার জন্য মির্জা ফয়সাল আমিন ভাইয়ের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। একথাটি আপনি সঠিক বলেছেন। ঠাকুরগাঁও শহর অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ শহর। যুগ যুগ ধরে আমরা এই শহরে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান একসাথে বসবাস করি। ৬ আগষ্ট থেকে সাম্প্রদায়িকতা, জংগীবাদীতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল আর বাংলা।সেসময় জেলার বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের বসত ভিটায় অগ্নি সংযোগের কিছু ঘটনা ঘটিয়ে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি জামাতসহ গণ-অভ্যুত্থানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেওয়ার অপচেষ্টা রুখতে বিএনপি জামাত,আলেম ওলামা,ছাত্র যুব সকলেই গ্রামে গ্রামে সংখ্যালঘু এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পাহারায় যুক্ত হয়ে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে।আর তাদের এই পাহারাদারির কাজ দূর্গাপুজা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। আর টিটো দত্তের বাড়ী মির্জা ফয়সাল আমিন ভাইয়ের নির্দেশে আমরাই পাহারা দিয়ে রক্ষা করেছি।কারণ সেসময়কার পরিস্থিতিটা ছিল গণ অভ্যুত্থানের মর্যাদা রক্ষা করা।
এবং সরকার পতনের এক সপ্তাহের মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের বৈঠকে স্থানীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠকে টিটোদা উপস্থিত ছিলেন।
#জ্যাকব মিল্টন আপনি দাবি করেছেন যে টিটোদাকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু আপনার এই কথাটিও সর্বৈব মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। কারণ আজ দুপুরেরও আমার সাথে টিটোদার কথা হয়েছে এবং তিনি ভারতে জাননি এটাও শতভাগ সত্যি। আর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপকদার সম্পর্কে আপনার দেওয়া তথ্যগুলোও চরম অসত্য।
#আপনি রাজনৈতিক হীনমন্যতা ও অন্য কোন তৃতীয় পক্ষের নিকট হতে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে কিংবা প্রভাবিত হয়ে যা বলেছেন, তা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয় বরং তথ্য সন্ত্রাস। মত প্রকাশের স্বাধীনতার মানে এই নয় যে আমি যাকে ইচ্ছে তাঁকে অশ্লীল অশ্রাব্য গালিগালাজ, খিস্তি খেওর করে কারো ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করবো।মত প্রকাশের স্বাধীনতা এই নয় যে উদ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে অন্যের সম্পর্কে ভূয়া তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করবো।
#সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও সুইপার কলোনীর ঠিকাদারি কাজে চাঁদাবাজির অভিযোগটি আপনার মনগড়া ও কল্পনাপ্রসুত।
#নিজের আইডির রিচ বৃদ্ধি করতে এবং তৃতীয় পক্ষের নিকট আর্থিক সুবিধা অথবা অন্য কোনভাবে প্রভাবিত হয়ে বিএনপির সংগ্রামী মহাসচিব আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, তাঁর ভাই ঠাকুরগাঁও পৌর সভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন ভাইও তাঁর পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে আপনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।
#আপনার প্রতি আমার পরামর্শ: আপনি আপনার যেই স্থানীয় প্রতিনিধি অথবা সোর্সের দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই না করে সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে নিজেকে কতটা নীচে নামিয়েছেন তা ভেবে দেখুন। আপনার স্থানীয় প্রতিনিধি অথবা সোর্স হয়তো আপনাকে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিতে চায়। আপনি প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে বিগত দিনে সোশ্যাল প্লাটফর্মে বিভিন্ন স্যাটায়ার ভিডিওর মাধ্যমে বেশ আয় করছিলেন কিন্তু হঠাৎ করে রিচ ডাউন হয়ে যাওয়ার কারণে রিচ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষের চরিত্র হনন করা অপরাধ। মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছে তাই বলা না অথবা কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট প্রচারণা করা না– এটা বুঝতে সক্ষম না হলে আপনার আর রেলস্টেশনের ডান্ডু খোর গান্ডুর কোন পার্থক্য নেই। ইদানীং এরকম কিছু মানুষ সোশ্যাল প্লাটফর্মে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের বিরুদ্ধে ভয়েস ও ভার্চুয়াল মব সৃষ্টির পায়তারা করছেন। এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
লেখক: বিশাল রহমান, গণমাধ্যমকর্মী
Email:bishalreporter@gmail.com