ব্যারিস্টার সাদিক ভাই আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর সাথে উঠাবসা সেই ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলের ছাত্রত্বের সময় থেকে। আমার চেয়ে এক বছরের সিনিয়র ছিলেন। ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর কিছুদিন আমাদের সাথে ছাত্র মৈত্রী করতেন। এরপর এ্যাপোলো ভাই,সাদিক ভাইয়েরা কয়েকজন ছাত্রলীগে যোগ দেন। আমার সঙ্গে তাঁর চমৎকার সম্পর্ক। কলেজ জীবনে সাদিক ভাই একাধারে কবিতা চর্চা, রাজনীতি এবং প্রেম সমানতালে চালিয়ে যেতেন। এ নিয়ে মাঝে মাঝে তাঁকে ” না প্রেমিক না বিপ্লবী” বলে খ্যাপানোর অপচেষ্টা করতাম। অপচেষ্টা একারণে বলছি যে, তিনি কখনোই খ্যাপতেন না।তাঁর অন্যান্য বন্ধুদের মতো তিনি প্রেমে ব্যর্থ হননি এক্ষেত্রেও তিনি সফল! ( নূর উস সাদিক চৌধুরী ভাই sorry)
পরবর্তীতে তিনি ব্যারিস্টারি পড়তে চলে যান। ব্যারিস্টারি কমপ্লিট করে দেশে ফিরে আসার পর তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন,সে সময় এ আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক তরুণ সম্পৃক্ত হন। তিনি আমাকেও ডেকেছিলেন, আমি তাঁর ডাকে সেই আন্দোলনে সাড়া দেইনি অথবা সাড়া দিতে পারিনি। ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের তরুণদের স্বপ্ন বর্তমানে বাস্তবায়নের পথে। আমি মনে করি ঠাকুরগাঁওয়ের যারা এই দাবি তুলেছিল তাঁরা সঠিক কাজটিই করেছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে শামিল না হলেও কখনো ঐ আন্দোলনের সাথে যুক্তদের সম্পর্কে কিংবা এ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কটুক্তি করিনি কারণ কোন উদ্যোগে কটুক্তি করা আমার পছন্দের কাজ নয়। কিন্তু এ শহরের অনেকেই তখন এ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করতো।খোদ একজন জনপ্রতিনিধিও এমন একটা কথা বলেছিলেন তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। ইতিমধ্যে টাংগন,সুখ আর সেনুয়ার জলস্রোত বহুদূর গড়িয়েছে, আমাদের সাদিক ভাইও ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হয়েছেন। তাঁর দাদা জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তাঁর প্রয়াত মা- বাবা দু’জনেই রাজনীতির মানুষ ছিলেন, মোদ্দা কথা তাঁর গোটা পরিবারের সাথে রাজনীতির গভীর সম্পর্ক। গত কয়েক দিন ধরে সাদিক ভাই আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে গ্রামের পথে পথে ঘুরছেন। তিনি একজন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় এলাকায় জনসংযোগ চালিয়ে দলীয় মনোনয়ন জন্য শীর্ষ নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণে কাজ করতেই পারেন। তাঁর এই জনসংযোগে আমাদের অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
কার জানি একটা পোস্টে এ নিয়ে একটা বিরুপ মন্তব্য দেখেই এখানে একটু চুলকাইতে আসলাম।
আসলে যারা মন্তব্য করছেন তাদের প্রতি বিনয়ের সাথে আমার প্রশ্ন একজন সাধারণ তৃতীয় বিভাগে পাশ করা স্নাতক জনপ্রতিনিধির লোক হিসেবে আপনারা যখন দেখছেন আপনাদের নেতা মেধা,যোগ্যতা, পারিবারিক অবস্থান সবদিক দিয়ে এই তরুণদের চেয়ে অনগ্রসর তখনই আপনাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেল? আরে ভাই আপনার নেত্রী আন্তঃনগর ট্রেন ও বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন একথা সত্যি কিন্তু আপনার নেতা এ বিষয়ে সংসদে আওয়াজ তুলতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ার কারণেই সাদিক ভাইদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এবং আমাদের আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছিল। সাদিক ভাইয়ের গণসংযোগেই ভয়ে থরথর করে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেল? শিক্ষিত তারুণ্যের হাতে আগামীর ঠাকুরগাঁওয়ের নেতৃত্ব গেলে সমস্যা কোথায়? আপনার দলের মনোনয়ন যদি সাদিক ভাইয়ের হাতে চলে যায় তবে আর যাই হোক এরকম uncultured, uncivilized & stupid leadership এর রাহু থেকে ঠাকুরগাঁও মুক্তি পাবে। আপনি চামচার পরিবর্তে সত্যিকারের রাজনৈতিক কর্মীর মর্যাদাটুকু পাবেন। অযথা চুলকানো শুরু করলে আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যত প্রচন্ড দূণের কবলে পরবে।
(ব্যক্তিগত ভাবে আমি সাদিক ভাইয়ের দলকে ভোট দিবো না কিন্তু অযোগ্য লোকের চেয়ে যোগ্য নেতৃত্বের পক্ষে আমার আজীবন নিঃশর্ত সমীহ থাকবেই)