নিজস্ব প্রতিবেদক ।।পুলিশের তৎপরতার মুখে ভেস্তে গেল চট্টগ্রামে জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠিত করার প্রক্রিয়া। পুরো পরিকল্পনার আড়ালে রয়েছে লন্ডন প্রবাসী এক লোক।
সিএমপির হালিশহর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, এই পরিকল্পনার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, তথাকথিত বিদেশি সংগঠনকে। যা বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার কোনই অনুমোদন নেই।
জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের তৎপরতা বাড়াতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে দি হেভেন ফাউন্ডেশন ইউকে নামে একটি সংগঠন। তবে পুলিশের তৎপরতায় হালিশহরের পূর্বনির্ধারিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প নিজেরাই গুটিয়ে নিয়েছে।
জানা গেছে, দি হেভেন ফাউন্ডেশন ইউকে নামে সংগঠনের উদ্যোগে হালিশহর খাজা গরীবে নেওয়াজ স্কুলে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প হওয়ার কথা ছিল শুক্রবারে। সংগঠনটির ওয়েবসাইটে ঠিকানা দেওয়া আছে লন্ডনে। বিদেশি কোনো সংস্থা বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু ওই সংগঠনের এমন কোনো অনুমোদন নেই। মূলত জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় করতে এই ক্যাম্প করতে চেয়েছে সংগঠনটি। প্রশাসনের নজর এড়াতে মাঝেমধ্যে ‘চিকিৎসা ক্যাম্পে’ হিন্দু ধর্মাবলম্বী চিকিৎসককেও রাখা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্র বলছে, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প হওয়ার কথা খাজা গরীবে নেওয়াজ স্কুলে। ওই স্কুল করার অনুমতি বাতিল হলে পাশের হালিশহর হাউজিং এস্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেখানেও ক্যাম্প করেনি সংগঠনটি। পুলিশের পক্ষ থেকে ক্যাম্পের বিষয়ে কেফায়েত উল্লাহ নামের একজনের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। এরপর আয়োজকরা আর মেডিকেল ক্যাম্প করেনি সংগঠনটি।
মনির মাহমুদ নামে এক লন্ডন প্রবাসী ওই ফাউন্ডেশনের প্রধান। তার বাড়ি সন্দ্বীপে। তিনি জামায়াতের ডোনার হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত।
হালিশহর খাজা গরীবে নেওয়াজ স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি দিলদার খান দিলু বলেন, ‘প্রথমে আমাদের পরিচালনা কমিটির সদস্য জসিমের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক থেকে মেডিকেল ক্যাম্প করার অনুমতি নেয় সংগঠনটি। কিন্তু আমাদের স্কুলের প্রাক্তণ শিক্ষার্থীদের সংগঠনের নির্বাচন আছে। নির্বাচনের কারণে আমরা অনুমোদন বাতিল করেছি। পাশের স্কুলে হওয়ার কথা ছিল। আমি এর বাইরে সংগঠনটির ব্যাপারে কিছু জানি না।’
এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার রাতে ও শনিবার বিকেলে মনির মাহমুদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ বলেন, ‘বড় কোনো আয়োজনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য খোঁজখবর নেওয়া হয়। একইভাবে মেডিকেল ক্যাম্পের বিষয়টি জানার পর আমরা আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কারা এই ক্যাম্প করতে চাচ্ছে, কেন করছে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কি-না এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছি। তারা সদুত্তর দেয়নি। পরে দেখলাম আর ক্যাম্প করেনি সংগঠনটি।’