বিনোদন প্রতিবেদকঃ ছোট্ট দিঘী কি চমৎকার অভিনয়। সেই সময় সবাই দিঘীর কথা গুলো মন দিয়ে দেখতো এবং শুনতো। টিভি স্কিনে দিঘীকে দেখলেই মন ভরে যেতো। এতটুকু একটা মেয়ে কত সুন্দর করে কথা বলে। মানুষের ভাবনাতে দিঘী বিজ্ঞাপনের ডায়লগ গেঁথে ছিলো। ফোনসেটে রিংটোন ছিল এই গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনের কথা গুলো।
তারপর কাবলিওয়ালা সিনেমাতে দিঘীকে দর্শক দেখে। ২০০৬ সালে কাজী হায়াতের কাবলিওয়ালা ছবিতে অভিনয়ের জন্য শিশু শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন দিঘী। তারপর চলচ্চিত্র অঙ্গনে অনেক নির্মাতা দিঘীকে কেন্দ্র স্ক্রিপ্ট লেখা শুরু করেন।
২০০৬ সালে এফ আই মানিকের চাচ্চু ও দাদীমাতে অভিনয় করে সকলের মন জয় করেন এই ক্ষুদে অভিনেত্রী। চাচ্চু ছবিতে দিঘীর অভিনয় দেখে দর্শক অবাক হয়। চোখে জল চলে আসে। ডিবজলের প্রতি দিঘীর ভালোবাসা টান যা, হাসপাতালে দিঘীর কেঁদে কেঁদে গান গাওয়া সত্যি মনকে ভিজিয়ে দিয়েছিল। ‘সাজানো এক বাগান ছিল তোমার ছোট্ট ঘরে…’।
২০০৭ সালে শাহ আলম কিরণের সাজঘর, শফিকুল ইসলাম ভেরবীর অবুঝ শিশু, হাসিবুল ইসলাম মিজানের কপাল অভিনয় এক কথায় অসাধারণ ছিল।
২০০৮ সালে ইলিয়াস কাঞ্চনের বাবা আমার বাবা ও পি এ কাজলের এক টাকার বউ এই দুটি ছবিতে অনবদ্য অভিনয়, এক কথায় দারুণ। ‘বন্ধুকের গুলির শব্দ আমি ভয় পায়’, তারপর কাঞ্চন নিজে থেকে দিঘীকে সাহস যোগায়। বাবা আমার বাবা ছবিতে দিঘীর অভিনয় আজও মনের মধ্যে গেঁথে আছে।
তারপর আরও অনেক গুলো ছবিতে শিশু শিল্পী চরিত্রে দিঘী অভিনয় করেন। সেই সময়ের সবগুলো চরিত্রই দিঘী অনবদ্য অভিনয় করেছেন। এরপর বেশ কিছুদিন দিঘীকে দেখা যায় না। দিঘীকে নিয়ে কোনো আলোচনা সমালোচনা কিছুই নেই। কোথায় আছেন দিঘী।
২০১১ সালে দিঘীর মা অভিনেত্রী দোয়েল গত হলেন। সেই সময় আমরা দিঘীকে কাঁদতে দেখেছি। এই পৃথিবীতে মা হল সবচেয়ে কাছের মানুষ। আস্থার জায়গা। সেই সময়টাতে আমাদের সকলেরই খুব বেশি খারাপ লাগে।
দিঘীকে দেখা যায়, টিকটকে। সেই ছোট্ট দিঘী বড় হয়েছেন। মানুষের চাওয়া পাওয়াটা বেড়েছে। অবশ্যই দিঘী নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করবেন। এবং ভালো কিছু উপহার দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা কী দিঘী দিতে পেরেছেন। তাকে নিয়ে একটা হতাশার জায়গা তৈরি হয়েছে।
২০২১ সালে দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর তুমি আছো তুমি নেই ছবিতে অভিনয় করে, নিজেকে একক নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ছবি দর্শক দেখেনি। প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের সংখ্যা ৭ জন ১০ জন। সেলিম খান ও শামীম আহমেদ রনির টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’তেও অভিনয় করেন। কিন্তু খুব একটা আলোচনাতে আসতে পারেননি নায়িকা হিসেবে দিঘী।
যে দিঘীকে কেন্দ্র করে স্ক্রিপ্ট লেখা হতো, যে দিঘীর অভিনয় দেখতে দর্শক হলে যেতো। হল ভর্তি থাকতো। সেই দিঘী বড় হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়। এখন অনেকে বলে, নায়ক হীন দিঘী। চলচ্চিত্রে একজন নায়িকা আছে যার কোনো নায়ক নেই। আফসোস। তবে ওটিটি প্লাটফর্মে নাকি দিঘী ভালো করছে। দিঘী ভালো কিছু করুক এটা আমরা চাই। কিন্তু আসল কথা হল আদৌ কি দিঘী ভালো কিছু করতে পারবে?