
ফজলার রহমান গাইবান্ধা থেকে ঃগাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও জনসমাগম হয়—এমন জায়গায় ‘মাতৃদুগ্ধ কর্নার’সহ উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মায়েদের। সেজন্য
শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মাতৃদুগ্ধ কর্নার স্থাপনের দাবি শিক্ষক,সাংবাদিক সমাজ সহ সচেতন মহলের।
বুধবার বিকেলে পলাশবাড়ী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, একটি শিশু অনবরত কেঁদেই চলেছে। কারণ বুঝতে পেরে শিশুটির মা শিশুটিকে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের এদিক-ওদিক তাকিয়ে কোন লাভ হচ্ছে না। এমত অবস্থায় বেশ বিব্রত হয়ে পড়েন।অবশেষে নিরুপায় হয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ডাকবাংলো মাঠে নোংরা জায়গায়, খোলামেলা পরিবেশে গিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য কোন রকমে দুগ্ধ পান করিয়ে বাচ্চাটির কান্না থামায়। এমন দৃশ্য প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে।
এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলায় কর্মরত সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল ইসলাম জানান, পলাশবাড়ী পৌরসহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নারীদের বাচ্চার দুধ খাওয়ানোর নির্দিষ্ট জায়গা নেই।যে কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভ্রমণরত (মা) যাত্রীদের ,সেই সাথে উপজেলায়,থানায়, পৌরসভায় এবং বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিতে আসা মায়েদের খুবই অস্বস্তিতে পড়তে হয়।
পলাশবাড়ীর অনলাইন পোর্টাল খবরবাড়ী 24. c o m এর সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মিল্টন বলেন,অন্যান্য সব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্য শপিং মল (মার্কেট) গুলোতেও এমন দৃশ্য বিরল।পৌর শহরের কালীবাড়ি বাজারে এমনকি শহরের গুরুত্বপূর্ণ বহুতল ভবন মার্কেটগুলোতেও মায়েদের দুধের বাচ্চাদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যে কারণে অনেক মা তার সন্তানদের খোলা জায়গায় বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে বাধ্য হয়।অনেক ক্ষেত্রে সামনে দাঁড়িয়ে মা অথবা শাশুড়ি এই দৃশ্য আড়াল করার চেষ্টা করেন।
পলাশবাড়ী এম.এ সামাদ কারিগরি ও বিজ্ঞান কলেজের প্রভাষক ও শিশু কানন স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক রুহুল আমিন মন্ডল এই প্রতিবেদক কে জানায়, পলাশবাড়িতে ইতিপূর্বে কোন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা,এনজিও কিংবা কোন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে, যেখানে কর্মজীবী নারীরা রয়েছেন, সেখানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার চালু হওয়া প্রয়োজন।বিশেষ করে শিশুকে বুকের দুধ পান করানো নির্বিঘ্ন করতে কর্মস্থল, পাবলিক প্লেস, সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে মাতৃদুগ্ধ বা ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন অন্যান্য উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এমতাবস্থায়,ভবিষ্যত প্রজন্মের পুষ্টির জন্য আর নারী ক্ষমতায়নের জন্য বিষয়টি অবহেলা না করে গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য পলাশবাড়ী পৌর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে, যথা- বাস স্ট্যান্ড,থানা চত্বর, উপজেলা চত্বর, পৌরসভা চত্বরে মাতৃদুগ্ধ দান কক্ষ, বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসক, পৌর প্রশাসকের প্রতি আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন পলাশবাড়ীর শিক্ষক ও সাংবাদিক সমাজ।