।। জুলফিকার আলী শাহ্।।
ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি ও মানুষের গর্ব, সাংবাদিক হারুন অর রশিদ – একটি নাম যা আজ নিছক সংবাদের শিরোনামে আবদ্ধ নয়, বরং তা সমাজের বিবেক, মানবতাবাদী কর্মকাণ্ডের প্রতিচ্ছবি এবং আপোষহীন প্রতিবাদের প্রতীক। তার হাতে ধরা কলম শুধু তথ্য পরিবেশনের মাধ্যম নয়, বরং সমাজের অবহেলিত, বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের নীরব আর্তনাদের শাণিত কণ্ঠস্বর। সত্যের উন্মোচনে যেমন তার কলম নির্ভীক, তেমনি ব্যথিতদের প্রতি তার হৃদয় সহানুভূতিতে পূর্ণ, যা তাকে করে তুলেছে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।
দীর্ঘকাল ধরে সাংবাদিকতার মতো এক মহান পেশায় নিয়োজিত থেকে হারুন অর রশিদ প্রমাণ করেছেন, পেশা শুধু জীবিকা অর্জনের উপায় নয়, এটি সমাজ পরিবর্তনের এক শক্তিশালী হাতিয়ারও বটে। তার প্রতিটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন কেবল ঘটনার গভীরে প্রবেশ করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং তা সমাজের গভীরে প্রোথিত সমস্যাগুলোকে সামনে এনেছে, নীতি-নির্ধারকদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে এবং বহু ক্ষেত্রে এনেছে আশার আলো ও সমাধানের পথ। অন্যায়, অবিচার আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার নির্ভীক লেখনী এক পরাক্রমশালী হাতিয়ার, যা কেবল অভিযোগের আঙুল তোলে না, বরং গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সমাজকে সঠিক পথে চালিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
তবে হারুন অর রশিদ কেবল একজন পেশাদার সাংবাদিক নন, তিনি ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন তার ব্যতিক্রমী ও আত্মনিবেদিত সমাজসেবামূলক কাজের জন্য। বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকে যখন অসংখ্য মানুষ জীবিকা হারিয়ে নিরন্ন হয়ে পড়েছিল, তখন তিনি তাদের জন্য হয়ে উঠেছিলেন এক ভরসার স্থল। নিজ উদ্যোগে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর অসহায়, গরীব ও নিরন্ন মানুষের মুখে ভালো মানের খাবার তুলে দেওয়ার যে ব্রত তিনি গ্রহণ করেছেন, তা প্রতিটি হৃদয়ে তাকে এক বিশেষ স্থান করে দিয়েছে। শিশুদের শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হওয়া, অসহায় বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, দুস্থ পরিবারের মাথার ওপর ছাদ তুলে দেওয়া কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে অবিচলভাবে দাঁড়ানো – তার কর্মপরিধি এক সুবিশাল মহীরুহের ন্যায় বিস্তৃত। পেশাগত ব্যস্ততার বাইরেও তিনি নিরলসভাবে ছুটে চলেন মানুষের কল্যাণে; যেখানেই মানবতা বিপন্ন, সেখানেই দেখা যায় তার সস্নেহ হাত, তার দৃঢ় সমর্থন।