
ফজলার রহমান গাইবান্ধা থেকে ঃগাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ধারাই শরিফুন্নেসা মাদ্রাসায় ল্যাব সহকারী নিয়োগ নিয়ে এক বড় ধরনের দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মাদ্রাসা কমিটি ও শিক্ষকদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে অতি গোপনে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পাঁয়তারা করছিলেন। সুপারের বিরুদ্ধে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ল্যাব সহকারী নিয়োগ চেষ্টার অভিযোগ; এলাকাবাসী ও কমিটির তোপে বোর্ড বাতিল।
এলাকাবাসী, শিক্ষক এবং পরিচালনা কমিটির সদস্যদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত তড়িঘড়ি করে নিয়োগ কমিটি বাতিল করতে বাধ্য হন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।গোপনীয়তার আড়ালে নিয়োগের চেষ্টা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদ্রাসায় ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হবে—এ বিষয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিংবা শিক্ষকদের কেউই জানতেন না। এমনকি এই সংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও কারো কাছে তুলে ধরা হয়নি। সবকিছু গোপন রেখেই গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর, ২০২৫) মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধিকে এনে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
ঘটনার একপর্যায়ে এলাকাবাসী, মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং অন্যান্য সদস্যগণ নিয়োগের এই গোপন প্রক্রিয়ার কথা জানতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ঘটনাস্থলে এসে এই অবৈধ নিয়োগ চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানান। ততক্ষণে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাও খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক অভিযোগ করেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়াটি চালানো হচ্ছিল ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। গোপনে এই অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”
এলাকাবাসী ও কমিটির সদস্যদের সম্মিলিত তোপের মুখে এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ডিজি প্রতিনিধি অত্যন্ত বিব্রতবোধ করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি দ্রুত নিয়োগ বোর্ড ভেঙে দিয়ে মাদ্রাসা ত্যাগ করেন। এর ফলে ভারপ্রাপ্ত সুপারের অবৈধ নিয়োগের চেষ্টা ভেস্তে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, মোজাম্মেল হক এই মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সূত্রপাত হয়েছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা তাঁর যোগদানের পর থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সুপার মোজাম্মেল হকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো তদন্ত শুরু হয় কি না, সেদিকে নজর রাখছেন এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট মহল।