
ঝড় আমীন: ঢাকা জুলাই বিপ্লবের অগ্রনায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর বর্বরোচিত গুলি বর্ষণের ঘটনায় অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হামলার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে রোববার সকালে মোটরসাইকেলটির মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পরে তাকে পল্টন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হাদিকে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর ৫৬-৬৩৭৫।
গোয়েন্দা সদস্যরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এমন কাপুরুষোচিত হামলা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও হতে পারে। তাদের ধারণা, ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হাদির ওপর হামলায় দেশবিরোধী শক্তির মদত থাকতে পারে।
এই হামলার পর জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশীজন, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে নানা সংশয় ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সন্দেহের তালিকায় রয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি ভারতে পালিয়েছেন।
এছাড়া, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ফয়সাল করিম মাসুদ নামে এক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত গুলি বর্ষণে অংশ নেওয়া মূল খুনিদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
খুনি দুজন যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সেজন্য দেশের সব বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে নজরদারি আরো কঠোর করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল, গোষ্ঠী ও নেতাদের মধ্যে ভয় ধরাতে চক্রটি হাদির ওপর গুলি করেছে। ডিবি আরও জানিয়েছে, এমন হামলার ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য তারা ঢাকাসহ সারাদেশে রেকি তল্লাশি করবে। একই সঙ্গে জামিনে থাকা সন্ত্রাসীদের আলাদা করে তালিকা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি। পল্টন থানার এসআই রকিবুল হাসান জানিয়েছেন, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।