
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১০ টি ইউনিয়ন এবং রানীশংকৈল পৌরসভা ও সেই উপজেলার ৬টি ইউনিয় নিয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসন। স্বাধীনতার পর থেকে বেশীর ভাগ সময় ধরে আসনটি আওয়ামীলীগ ও মহাজোটের দখলে ছিল। বিএনপি জয় পায় দুইবার। আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিড়ে এখন সরগম আসনটি। এরই মধ্যে প্রার্থী চুড়ান্ত করেছেন জামায়াতে ইসলামী। প্রার্থী চুড়ান্ত করতে পরেনি বিএনপি সহ অন্যান রাজনৈতিক দলগুলো। অন্যান্য দলের প্রার্থীর সাথে এবার নতুন করে যোগ হয়েছে এনসিপি এবং গন অধিকার পরিষদের প্রার্থীরা। বিএনপির ৭ জন সহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা এখন কম বেশী মাঠে সরব। প্রবীনদের সাথে নবীরাও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামী থেকে রানীশংকৈল উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষনা করেছেন। বিএনপি থেকে দলীয় প্রার্থীর আনুষ্ঠানিক নাম ঘোষনা করা না হলেও পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাহিদুর রহমানের মনোনয় প্রায় চুড়ান্ত বলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সাথে কথা জানা গেছে। তিনি ছাড়াও এ আসনে বিএনপি থেকে মনোয়ন চাইবেন যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা কামাল আহম্মেদ আনোয়ার, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. জয়নাল আবেদিন, ব্যরিষ্টার রেকনুজ্জামান ও রানীশংকৈল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল ওয়াদুদ বিন নুর আলিফ। এনসিপি থেকে দলের যুগ্ন মুখ্য সমন্বয়ক ও রানীশংকৈণ উপজেলার বাসিন্দা গোলাম মুর্তজা সেলিম, গন অধিকার পরিষদ থেকে মামুনুর রশিদ নির্বাচন করতে সভা সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও অন্যান্য ইসলামী দলেরও কয়েকজনকে মাঝে মধ্যে সভা করতে দেখা যায়। জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবার নির্বাচনে অংশ নিবেন কি না এনিয়ে শংকায় রয়েছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালে দল থেকে নির্বাচন করে হেরে যান। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় প্রার্থী হননি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামীলীগের ভোট ডাকাতির পরও সেবার রংপুর বিভাগে তিনিই একমাত্র বিএনপি প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে দলের সিদ্ধান্ত মতে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। তিনি ছাত্রদল, যুবদল এবং বিএনপির হয়ে এ আসনে দলের হাল ধরে আছেন। আশা করছেন আগামীতে দল তাকেই মনোনয়ন দিবেন। কারণ রাজনীতির দীর্ঘ জীবনে দুর্নীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। দলের দুর্দিনে তিনিই মাঠে সরব ছিলেন এবং এখনো আছেন। সুখে দুখে থেকেছেন দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে। অত্যন্ত সাদা মাঠা ভাবে জীবন যাপন করেন তিনি। জুলাই গন অভ্যুস্থানের আগে এবং এর পরবর্তী সময়ে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া মহল্লায়। দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাড়াচ্ছেন। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের নানা আপদে বিপদে পাশে থেকেছেন এবং আছেন। এবারের দুর্গাপুজায় এ আসনের প্রতিটি মন্ডপে নিজস্ব তহবিল থেকে অনুদান দিয়েছেন। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এবার তার প্রতি ঝুকেছেন।
জাহিদুর রহমান ছাড়াও দলের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের দোড়গড়ায়। ধানের শীষের পক্ষে জনমত গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভোটাররা জানান, জাহিদুর রহমান ছাড়া বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশীর ভাগ নেতাকে সব সময় মাঠে দেখা যায় না। ব্যস্ত থাকেন নিজ নিজ পেশায়। নির্বাচন এলেই মাঠে ঊকি মারেন তারা।
রানীশংকৈল উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীন নেতা মিজানুর রহমানকে এবার জামায়াতে ইসলামী থেকে প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে। তিনি এবার জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তরুন প্রজন্মে হয়েই নির্বাচনে অংশ নিতে চান এনসিপির গোলাম মূর্তজা সেলিম। সাধারন মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান গন অধিকার পরিষদের মামুনুর রশিদ। তারাও মাঠে সভা সমাবেশ করছেন।
এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬০। এর মধ্যে নারী ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৯০ এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭০। সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার। এ আসনে জিততে হলে নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের টানতে হবে প্রার্থীদের।