
।। শহীদুল ইসলাম শহীদ, পঞ্চগড়।।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ উসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে ছাত্রজনতার বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, প্রতিবাদ সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রজনতা পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সড়কে ব্যারিকেড দিলে শত শত মালবাহী ট্রাক আটকা পড়ে। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা জেলা প্রশাসক কাজী সায়েমুজ্জামানের বাসভবন ঘেরাও করেন।
ঘেরাও চলাকালে মাইকিং ও স্লোগানের মুখে জেলা প্রশাসক বাসভবন থেকে বের হয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন। এ সময় আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী ও মোকাদ্দেসুর রহমান সানসহ বক্তারা সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান ও জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
পরে জেলা প্রশাসক পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এরপর মিছিল নিয়ে আবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ফিরে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘বাংলাদেশি পন্থি ছাত্র জনতা’র ব্যানারে শত শত শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পুনরায় বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইনের নেতৃত্বে আরেকটি বড় বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যেখানে হাজারো ছাত্রজনতা অংশ নেন। মিছিলটি পঞ্চগড়–তেঁতুলিয়া মহাসড়ক হয়ে জেলা জজ কোর্ট পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় শহীদ মিনারের সামনে এসে শেষ হয়।
সেখানে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্র শক্তি, ছাত্র শিবির, গণঅধিকার পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাদি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো আওয়ামী লীগ নেতাদের আটক করতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
দাবি মানা না হলে ৫ আগস্টের মতো আবারও কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।