
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ভূল্লী নদীর পাড় অবৈধভাবে কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। এতে নদী তীরবর্তী আবাদি জমি ও ভূল্লী বাঁধ সেতু মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
রবিবার (দুপুরে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভূল্লী নদীর বাঁধ সেতু থেকে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ গজ দূরে নদীপাড় কেটে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। তিনটি ট্রাক্টরে করে সেই মাটি দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে নদীর পূর্ব পাশে একটি খোলা মাঠে। পরে সেখানে স্তুপ করে রেখে রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন স্থাপনার কাজে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
এ সময় ট্রাক্টর চালক শহিদুল ইসলাম জানান, নূরে আলম নামে এক ব্যক্তির নির্দেশে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। এসব মাটি চলমান রাস্তার কাজে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, “এটা আমাদের ভুল হয়েছে।”
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে যদি নদীর তীর ভাঙনের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, তাহলে সেখানে মাটি বা বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে সেতু, কালভার্ট, বাঁধ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ওপরও কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নদীর পাড় কেটে মাটি নেওয়া হলে সামান্য বন্যাতেই বাঁধ সেতু ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আশপাশের ফসলি জমিতে নদীর পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, “দিন–রাত ট্রাক্টরে করে মাটি বহন করায় কাঁচা রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। চলাচল করতেই কষ্ট হচ্ছে।”
এক কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, “নদীর পাড় কাটলে সামনে বান আইলে জমিতে পানি ঢুকবে। তখন ফসল আর থাকবে না। কেউ কিচ্ছু দেখতেছে না।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, “নদীর পাড় যারা কাটছে, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে স্থানীয়দের দাবি, অবৈধভাবে নদীর পাড় কাটার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী যেই হোক না কেন, তাকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।