1. live@dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় : দৈনিক ঝড়
  2. info@dailyzhornews.com : দৈনিক ঝড় :
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নলছিটিতে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প পঞ্চগড়ে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা ২৮ অক্টোবর ভারতের নির্দেশে আ’লীগ ফ্যাসিবাদের প্রস্তুতি নিয়েছিল- রাশেদ প্রধান ভয়ের কোন কারণ নেই বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ – ব্যারিস্টার নওশাদ জমির নলছিটিতে এডঃ শাহাদাৎ হোসেনের গণসংযোগ ও পথসভায় জনতার ঢল পলাশবাড়ীতে ছাত্রদলের সাংগঠনিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত নরসিংদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনে গ্রাম-কৃষিজমি ঝুঁকিতে, আইন থাকলেও অপরাধীরা অধরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সাংবাদিক কনফারেন্স ঠাকুরগাঁওয়ে হোটেল থেকে ভোরে বেরিয়ে নিখোঁজ তিন ছাত্রীর খোঁজ মেলেনি ৪৮ দিনেও,কবে মিলবে তাদের খোঁজ আটোয়ারীতে পরিত্যক্ত লাকড়ি রাখার ঘর থেকে রিভালবার ও দুই রাউন্ড গুলি সহ ৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার

জাতীয় জীবদ্দশায় নিজের জন্য কবর খনন করলেন ঠাকুরগাঁওয়ের ব্যবসায়ী

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।জীবদ্দশায় নিজের জন্য কবর খনন করলেন ঠাকুরগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ঠাকুরগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ডক্টর গোলাম আল ফারুক তার জীবদ্দশায় নিজের জন্য কবর খনন করলেন।

বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গাছগাছালিতে ঘেরা নিরিবিলি পরিবেশ। চারপাশে সুনশান নীরবতা, যেন প্রকৃতি নিজেও কোনো অদৃশ্য রহস্যকে লুকিয়ে রেখেছে। সেই নীরবতার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এক ব্যতিক্রমী মাটির ঘর। উভমুখী দরজা-জানালা বিশিষ্ট ছোট্ট ঘরটির ভেতরে প্রবেশ করলে চোখ আটকে যায় অদ্ভুত এক দৃশ্যে—ঘরের ভেতরে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে একটি কবর। আর সেই কবরের ওপর খাটিয়ায় বিছানো আছে কোলবালিশ ও সাদা চাদর।

এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের কচুবাড়ি-কৃষ্টপুর গ্রামের এক বাস্তব চিত্র। এখানে খামারবাড়িতে নিজের জীবদ্দশাতেই কবর খুঁড়ে রেখেছেন ডক্টর গোলাম আল ফারুক নামের এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী।

স্থানীয় লোকজন জানালেন, দীর্ঘদিন ধরে ধর্মপ্রাণ এই ব্যবসায়ী গ্রামের মানুষের কাছে উদারতা ও দানশীলতার জন্য পরিচিত। তবে সম্প্রতি তাঁর এই উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জীবিত থাকতেই নিজের কবর খুঁড়ে রাখা—এমন ঘটনা অনেকের কাছেই অস্বাভাবিক মনে হলেও ফারুক সাহেবের কাছে এটি ছিল শেষ জীবনের শান্তির প্রস্তুতি।

তিনি স্থানীয় লোকদের বলতেন, “মৃত্যু অনিবার্য, তাই আগে থেকেই নিজের শেষ ঠিকানার ব্যবস্থা করে রাখা উচিত। এতে মানুষ মৃত্যুর কথা সর্বক্ষণ মনে রাখতে পারে, জীবনের ক্ষণস্থায়িত্ব বোঝে।”

ফারুক সাহেব তাঁর খামারবাড়ির এক পাশে বিশেষভাবে এই মাটির ঘর নির্মাণ করেন। ইট-পাথরের পরিবর্তে সাধারণ মাটির দেওয়াল, উপরে টিনের ছাউনি, দুই দিকেই দরজা ও জানালা—দেখতে সাধারণ হলেও ভেতরে রাখা কবর এটিকে দিয়েছে অন্যরকম তাৎপর্য।

কবরের ওপর রাখা হয়েছে একটি কাঠের খাটিয়া, যেখানে তিনি মাঝে মাঝে বিশ্রামও নিতেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন। তাঁদের মতে, মৃত্যুর কথা স্মরণ করে নিজের ভেতরে বিনয় ও ভয় জাগ্রত রাখতেই এমন অভ্যাস গড়ে তুলেছিলেন ব্যবসায়ী।

এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হালিম বলেন, “আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম উনি হয়তো মাজার বা ধর্মীয় কোনো স্থাপনা তৈরি করছেন। পরে বুঝলাম, জীবিত থাকতেই নিজের কবর বানিয়েছেন। বিষয়টি আমাদের কাছে অদ্ভুত মনে হলেও গভীর চিন্তার খোরাক জোগায়।”

আরেকজন তরুণ বাসিন্দা নাজমুল হক বলেন, “মৃত্যু নিয়ে মানুষ সাধারণত ভীত থাকে। কিন্তু তিনি মৃত্যুকে খুব সহজভাবে গ্রহণ করেছেন। এ দৃশ্য দেখে আমরাও বুঝতে পারি জীবন ক্ষণস্থায়ী।”

ইসলামী শিক্ষার আলোকে মৃত্যুর আগে মৃত্যুর প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি অপরিচিত নয়। অনেক আলেম বলেন, মৃত্যু নিয়ে চিন্তাভাবনা মানুষের জীবনকে সৎপথে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। তবে জীবিত অবস্থায় কবর খুঁড়ে রাখা একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।

ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় এক মাদ্রাসা শিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, “মৃত্যু স্মরণ করা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য। যদিও এভাবে কবর খুঁড়ে রাখা প্রচলিত নয়, তবে এর মাধ্যমে তিনি যে মৃত্যুর কথা সর্বদা স্মরণে রেখেছেন, তা প্রশংসনীয়।”

এখন এলাকার অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে এসে কৌতূহল নিয়ে দেখছেন এই মাটির ঘর। কেউ কেউ ছবি তুলছেন, কেউ আবার নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে ভাবছেন নিজের মৃত্যুর কথা।

কচুবাড়ি-কৃষ্টপুর গ্রামের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ তাই এখন কেবল একটি ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং মৃত্যুচিন্তা ও জীবনদর্শন নিয়ে মানুষের মাঝে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য ও ছবি পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রকাশিত যেকোনো লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কিত দায়ভার কেবলমাত্র, সম্পাদক এর।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট